বিশাল চুলায় পোড়ানো হয় খাশোগির দেহ : চাঞ্চল্যকর দাবি আলজাজিরার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩১ পিএম, ০৪ মার্চ ২০১৯

সৌদি আরবের নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর তার মরদেহ বৃহৎ আকারের চুলায় পোড়ানো হয়েছিল। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে নিযুক্ত সৌদি আরবের কনস্যুলেট জেনারেলের বাসভবনে তার মরদেহ পোড়ানো হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সৌদির ঘাতক দলের হাতে এই সাংবাদিক হত্যার বিষয়ে রোববার রাতে বিস্তারিত একটি অনুসন্ধানী তথ্যচিত্র প্রচার করেছে আল-জাজিরা আরবি।

এতে বলা হয়েছে, সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে খাশোগিকে হত্যার পর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করা হয়। পরে কয়েকটি ব্যাগে ভরিয়ে কয়েকশ’ মিটার দূরে অবস্থিত কনস্যুলেট জেনারেলের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। ভেতরে যখন তার মরদেহ পোড়ানো হয় তখন বাইরে নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন : টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার জামাল খাশোগি

খাশোগির মরদেহ পোড়ানোর জন্য চুল্লি নির্মাণকাজে জড়িত তুরস্কের এক শ্রমিকের সাক্ষাৎকার নিয়েছে আলজাজিরা। তিনি বলেছেন, ‘সৌদি কনসাল থেকে দিক-নির্দেশনা পাওয়ার পর এই চুল্লি নির্মাণ করা হয়। তাকে বলা হয়েছিল, এই চুল্লি হবে অনেক গভীর, তাপমাত্রা হবে এক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে- যাতে যেকোনো ধরনের ধাতব পদার্থও গলে যায়।

শরীরের কোনো অংশ অবশিষ্ট না থাকে সেজন্য হত্যাকাণ্ডের পর খাশোগির মরদেহের টুকরো ওভেনে সিদ্ধ করা হয়েছিল। সৌদি কনসালের দফতরের দেয়ালে খাশোগির রক্তের সন্ধান পেয়েছেন তুর্কি তদন্তকারীরা। গত ২ অক্টোবর ওয়াশিংটন পোস্টের এই কলামনিস্টকে হত্যার পর কনসালের দেয়াল নতুন করে রঙ করা হয়। তদন্তকারীরা সেই রঙ উঠে ফেলার পর দেয়ালে রক্তের আলামত পেয়েছেন।

khashoggi-killing

আলজাজিরার চাঞ্চল্যকর এই তথ্যচিত্র তুরস্কের নিরাপত্তা কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও খাশোগির বেশ কয়েকজন তুর্কি বন্ধুর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়।

আরও পড়ুন : খাশোগি ইস্যুতে ‘গণেশ উল্টানো’র ভয়ে ট্রাম্প

সৌদি আরবের প্রতাপশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি তার তুর্কি বংশোদ্ভূত বান্ধবীকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ২ অক্টোবর সৌদি কনস্যুলেটে যান।

কনস্যুলেটে প্রবেশের পর সৌদির এই সাংবাদিকের আর কোনো খোঁজ মিলছিল না। শুরুর দিকে সৌদি আরব জানায়, কনস্যুলেট থেকে কাগজপত্র সংগ্রহের পর বেরিয়ে গেছেন তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে বৈশ্বিক চাপ ও সমালোচনার মুখে কনস্যুলেটের ভেতরে জামাল খাশোগি খুন হয়েছেন বলে স্বীকার করে সৌদি আরব।

আরও পড়ুন : খাশোগির লাশ টুকরো করার ছবি ফাঁস

মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে খাশোগিকে হত্যা করা হয়। তবে সৌদি আরব এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

খাশোগি হত্যার সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে চিহ্নিত করে দোষী সাব্যস্ত করেছে সৌদি আরব। দেশটিতে তাদের বিচার চলমান রয়েছে। সন্দেহভাজন এই খুনীদের তুরস্কের হাতে তুলে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে রিয়াদ।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।