মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে প্রচারণা শুরু করলেন বার্নি স্যান্ডার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫০ এএম, ০৩ মার্চ ২০১৯

কর্পোরেট মুনাফাবাদের বিরোধিতা এবং ‘রাজনৈতিক বিপ্লব’ ঘটানোর প্রত্যয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রচারণা শুরু করেছেন মার্কিন সিনেটর ও ডেমোক্রেট রাজনীতিবিদ বার্নি স্যান্ডার্স।

নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে এক বক্তব্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

ভারমন্ট অঞ্চলের ৭৭ বছর বয়সী স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের হয়ে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে হিলারি ক্লিন্টনের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। এবার তিনি আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

এবার ডেমোক্রেটদের হয়ে প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন পেতে আরও অন্তত ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করবেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, নিউ জার্সির সিনেটর কোরি বুকার আর স্যান অ্যান্টনিওর মেয়র হুলিয়ান ক্যাস্ত্রো।

স্যান্ডার্স তার বক্তব্যে অঙ্গীকার করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ‘মানুষকে ঐক্যবদ্ধ’ করবেন। এছাড়াও বেশকিছু নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। ‘ধনিক শ্রেণি’ ও তাদের লোভকে প্রতিহত করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্যান্ডার্স।

সব মার্কিনিদের যেন কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা থাকে সে লক্ষ্যে ‘রাষ্ট্রীয় কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা’ প্রদান। নিম্নতম মজুরি ৭.২৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৫ ডলার করার প্রতিশ্রুতি। অভিবাসন সংক্রান্ত নীতিতে ‘বিশদ ও বিস্তারিত’ পরিবর্তন আনা এবং লক্ষাধিক অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বিনামূল্যে শিক্ষাদান এবং স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার করে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দেয়া অঙ্গীকার করেছেন স্যান্ডার্স। ‘অর্থনৈতিক, সামাজিক, জাতিগত ও পরিবেশগত ন্যায়বিচার’ নিশ্চিত করার বিষয়টিতেও কাজ করবেন বলেও অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

বার্নি স্যান্ডার্স রঙ বিক্রেতার কাজ করা একজন ইহুদি অভিবাসীর সন্তান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বড় হয়েছেন, যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ধনী রিয়েল এস্টেট ডেভলাপারের ছেলে।

ব্রুকলিনে জন্ম নেয়া বার্নি স্যান্ডার্স তার বক্তব্যের একপর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে নিজের তুলনাও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা আমাকে অঢেল সম্পদ দিয়ে যাননি যা দিয়ে বিলাসবহুল অট্টালিকা বা আমোদের জন্য কান্ট্রি ক্লাব তৈরি করা যায়। কিন্তু তিনি আমার সামনে একজন আদর্শ পিতার উদাহরণ তৈরি করে গেছেন, যিনি অর্থ-বিত্ত ছাড়াই অসীম সাহসের সাথে নতুন জীবনের জন্য লড়াই করতে সক্ষম ছিলেন।’

কে এই বার্নি স্যান্ডার্স?

মার্কিন কংগ্রেসের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে স্বতন্ত্র সিনেটর হিসেবে ছিলেন বার্নি স্যান্ডার্স। তবে ডেমোক্রেট বা রিপাবলিকানদের হয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা না করলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যাবে বলে ডেমোক্রেটদের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন বলে জানান তিনি।

তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা করেছেন এবং ১৯৬০ ও ১৯৭০ এর দশকে যুদ্ধবিরোধী এবং নাগরিক অধিকারের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।

১৯৯০ সালে ৪০ বছরের মধ্যে প্রথম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মার্কিন প্রতিনিধি সভার একজন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন বার্নি স্যান্ডার্স। ২০০৭ সালে সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি প্রতিনিধি সভায় অন্তর্ভূক্ত ছিলেন।

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শুরুতে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত না হলেও কয়েকটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বিতর্ক প্রচারিত হবার পর হঠাৎই তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।

নিজেকে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে দাবী করা বার্নি স্যান্ডার্স এমন একটি অর্থনীতি তৈরি করার প্রত্যাশা করেন ‘যা শুধু ধনীদের জন্য নয়, সব পর্যায়ের মানুষের জন্য’ কাজ করবে।

সূত্র : বিবিসি

এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।