কাশ্মীরে ১০ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সম্প্রতি পুলওয়ামা হামলার পর জম্মু-কাশ্মীরে ও পাক-ভারত সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। কাশ্মীরি নেতাদের দেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। তাছাড়া যেকোনো হামলার ছাড়পত্রও দিয়ে রেখেছেন মোদি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্দেশনা পাওয়ার পর সেখানে জরুরি ভিত্তিতে ১০ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্দেশনা পাওয়ার পর বিমানে করে সহস্রাধিক সেনা শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী মিলে এসব সেনা কোথায় মোতায়েন করা হবে তার পরিকল্পনা করবে।

এদিকে গতকাল রাতে বিচ্ছিন্নতাবাদী দল জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের (জেকেএলএফ) প্রধান ইয়াসিন মালিককে আটক করা হয়েছে। পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। তাছাড়াও পুলিশের ওই অভিযানে বিচ্ছিন্নতাবাদী দল জামায়াতে ইসলামীর প্রধান আব্দুল হামিদ ফয়েজসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী গেফতার করা হয়।

কাশ্মীরে নতুন করে মোতায়েন করা আধাসামরিক বাহিনীর ওইসব কোম্পানির প্রতিটিতে ৮০ থেকে ১৫০ জন করে জওয়ান রয়েছেন। শুক্রবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিলে ১০ হাজারের বেশি সেনাকে দ্রুত শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হয় বিমানে করে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় পাকিস্তানের সশস্ত্র সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৪০ সেনা নিহত হলে কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়। হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে যেকোনো অভিযান পরিচালনার জন্য অনুমতি দেন। আর এরপর থেকে সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

কাশ্মীরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারির পর থেকে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ওই হামলার মূলহোতা ছাড়াও জইশ-ই-মোহাম্মদের আরও দুই সদস্য নিহত হয়। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা নানান তথ্যের ভিত্তিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, সশস্ত্র ওই জঙ্গি সংগঠন পনুরায় কাশ্মীরে বড় ধরনের হামলার ছঁক কষছে।

তাছাড়া গতকাল পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও পাল্টা হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠক শেষে সেনাবাহিনীকে যেকোনো হামলা চালানোর অনুমতি দেয়া হয়। তাছাড়া সেনাবাহিনী পক্ষ থেকেও জানানো হয়, তারা যুদ্ধ চায় না তবে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত আছে।

নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকে শেষে ইমরান খান পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ভারতের কোনো আগ্রাসন কিংবা হামলার জবাব ব্যাপক ও সর্বতোভাবে দিতে হবে। এটা আমাদের নতুন পাকিস্তান। দেশের নাগরিকদের আমরা দেখাতে চাই যে, তাদের নিরাপত্তা দিতে সরকার বদ্ধ পরিকর।’

পাক সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর ভারতকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন বলেন, ‘তারা যুদ্ধ শুরুর চেষ্টা করছে কিন্তু আমরা তা চাচ্ছি না। আমরা শুধু আমাদের দেশকে রক্ষার চেষ্টা করছি যা আমাদের অধিকার।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত হামলা শুরু করলে আমরা বিস্মিত হবো না। কিন্তু পাল্টা জবাব পাওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত থাকবে আশা করি। পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাবেন না। সেনারা তাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মাতৃভূমি রক্ষার জন্য লড়াই করবে।’

এসএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।