তদবির করে যখন তখন ছুটি পোস্টিং ডেপুটেশন বন্ধ হচ্ছে


প্রকাশিত: ০৭:৫০ এএম, ২৭ আগস্ট ২০১৫

তদবির করে যখন তখন পোস্টিং, ডেপুটেশন, ছুটি নেয়া বন্ধ হচ্ছে স্বাস্থ্য সেক্টরে। এখন  থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনেই এ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম সম্পাদিত হবে।

এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পোস্টিং, ডেপুটেশন ও ছুটি এবং এ সংক্রান্ত সকল কাজে আবেদনপত্রের সাথে এককপি করে এইচআরএম (হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট) বায়োডাটা সংযুক্তি হিসাবে জমা প্রদান বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক আদেশে এইচআরএম বায়োডাটা ছাড়া কোন প্রকার আবেদনপত্র ফরওয়ার্ড না করার নির্দেশনা জারি হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফততের জারিকৃত আদেশে বলা হয় এইচআরএম বায়োডাটা ছাড়া কোন প্রকার আবেদনপত্র স্বাস্থ্য অধিদফতরের গ্রহণযোগ্য হবেনা। এইচআরএম সফটওয়্যার থেকে বায়োডাটা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক নির্ভরযোগ্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের এইচআরএম শাখার মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে কর্মরত সকল ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় সকল প্রকার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে মানবসম্পদ তথ্য ভাণ্ডার তৈরি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন-২০১৪ অনুসারে বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ডাক্তারসহ প্রথম শ্রেণির ২৩ হাজার ৫৮০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ২০ হাজার ৪৩২ জন, তৃতীয় শ্রেণির ৫২ হাজার ৪৭৭ জন ও চতুর্থ শ্রেণির ২৭ হাজার ৪২৭ জন সহ মোট ১ লাখ ২৩ হাজার ৯১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল।  

সাম্প্রতিক সময়ে আরেকদফা সারাদেশের স্বাস্থ্য জনবলের বিস্তারিত হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। ২৫ আগস্ট ছিল তথ্য-উপাত্ত জমা দেয়ার শেষ দিন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, মানবসম্পদ তথ্য ভাণ্ডারে স্বাস্থ্য সেক্টরে সকল কর্মকতার ও কর্মচারীদের প্রত্যেকের সম্পর্কে ৪০/৪৫ ধরনের তথ্য-উপাত্ত (নাম, ঠিকানা, বর্তমান কর্মস্থল, পদবী, যোগদানের তারিখ, চাকরিতে প্রবেশের তারিখ ইত্যাদি) রয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে কম্পিউটারের মাউসে ক্লিক করলেই মুহূর্তেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা দেশের সকল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বিশেষায়িত চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন ও কমিউনিটি ক্লিনিকের কোথায় কতগুলো পদ শূন্য রয়েছে, কোন পর্যায়ের কতজন কতদিন সেখানে চাকরিরত রয়েছেন সে সম্পর্কে জানতে পারবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ইতিপূর্বে স্বাস্থ্য অধিদফতরের লক্ষাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য নির্ভরযোগ্য মানবসম্পদ তথ্যভাণ্ডার না থাকায় পোস্টিং, ডেপুটেশন, ছুটিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যা হতো।

মন্ত্রী, সচিব, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সুপারিশ সম্বলিত আবেদনপত্র জমা দিয়ে ইচ্ছেমাফিক পোস্টিং, ডেপুটেশন, ছুটি মঞ্জুর করিয়ে নিতো। ফলে একই কর্মস্থলে একাধিক ব্যক্তির পোস্টিং ও ডেপুটেশন দেয়া হতো। যখন তখন ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছুটি নিয়ে নিতেন। ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাসেবার মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটতো।

সঠিক তথ্য-উপাত্ত না থাকায় কোন এলাকাতে ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানের ছড়াছড়ি আবার কোথাওবা ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা দেয়ার জনবল থাকতোনা। নতুন এ প্রক্রিয়ায অনলাইনে প্রয়োজন অনুসারে ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার অধিকতর উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা মনে করছেন।

এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।