৫৭ ধারা নিয়ে সরকারকে ১১ নাগরিকের লিগ্যাল নোটিশ


প্রকাশিত: ০৬:২৬ এএম, ২৭ আগস্ট ২০১৫

হাইকোর্টে রিট আবেদন এবং চার সচিবকে আইনি নোটিশের পর এবার তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন দেশের ১১ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

বৃহস্পতিবার সকালে ডাক ও রেজিস্ট্রি যোগে ১১ নাগরিকের পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এর আগে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের অন্য একজন আইনজীবী ওই আইনের ৫৭ ও ৮৬ দুটি ধারা বাতিল চেয়ে সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ এবং সংক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি হাইকোর্টে ৫৭ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।

বৃহস্পতিবার সকালে এ ধারা বিলুপ্তি সম্পর্কে জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, ও তথ্য ও য্গোযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব বরাবর এ নোটিশ পাঠায় ১১ ব্যক্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহমেদ কামাল, আকমল হোসেনসহ ১১ ব্যক্তির পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বিলুপ্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে হবে। অন্যথায় তারা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবেন।

রিট তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন-২০০৬’র (সংশোধনী ২০১৩) ৫৭ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বুধবার বিকেলে জনৈক জাকির হোসেনের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী শিশির মনির।

তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ কারাদণ্ড ১৪ বছর ও ১ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। অথচ একই অভিযোগে পর্নোগ্রাফি আইনে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে। এটি সরাসরি বৈষম্য। আইনের এ ধারাটি সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩২ এবং ৩৯ ধারার পরিপন্থী। রিটে বিবাদী করা হয়েছে আইন সচিব ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ (সংশোধনী ২০১৩) এর ধারা দুটি ধারা বাতিল চেয়ে বুধবার সকালে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।

নোটিশে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব এবং তথ্য সচিবকে ২৪ ঘণ্টা সময় সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। যদি এর মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। সেখানে আইনের ৫৭ ও ৮৬ নম্বর ধারাকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
 
ওই আইনের ৫৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, “কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েব সাইটে বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি ১ অনধিক চৌদ্দ বৎসর এবং অন্যূন সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন৷

এছাড়া ৮৬ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কার্যের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য সরকার, নিয়ন্ত্রক, উপ-নিয়ন্ত্রক, সহকারী নিয়ন্ত্রক বা তাহাদের পক্ষে কার্যরত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোন প্রকার আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না৷

এফএইচ/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।