ভারতের প্রথম ‘জাতি-ধর্মহীন’ নাগরিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৭ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

জাতি-ধর্মের ভেদাভেদহীন মানব সমাজের স্বপ্ন দেখেন তিনি। তথাকথিত ধর্ম ও জাতি বিষয়ে কোনোদিনই বিশ্বাস ছিল না তার। জাতি-ধর্মের কচকচানি থেকে ঊর্ধ্বে ওঠে মানুষ হওয়ার শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন পরিবারের লোকজনের কাছ থেকেই। সেই মতো ২০১০ সালে নিজেকে ‘জাতি-ধর্মহীন’ ঘোষণা করার আবেদন করেছিলেন সরকারের কাছে। দীর্ঘ নয় বছর লড়াইয়ের পর নিজের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি স্বীকৃতি পেলেন তিনি।

তামিলনাড়ুর তিরুপাত্তুরের বাসিন্দা স্নেহা পার্থিবরাজা। ৩৫ বছর বয়সী স্নেহা পেশায় আইনজীবী। সম্প্রতি তিরুপাত্তুরের তহশিলদার টি এস সাথিয়ামুর্তি স্নেহার হাতে তুলে দেন সরকারি স্বীকৃতি। সেখানে লেখা, ‘তিনি কোনো জাতি বা ধর্মের অন্তর্গত নন।’

আর এর মধ্য দিয়ে ভারতের প্রথম নাগরিক হিসেবে এই ধরনের কোনো স্বীকৃতি পেলেন স্নেহা পার্থিবরাজা।

এই স্বীকৃতি পাওয়ার পর একটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে স্নেহা বলেন, ‘জাতপাতে বিশ্বাসীরা যদি সরকার থেকে স্বীকৃতি পেয়ে থাকেন, তাহলে আমরা যারা জাতি-ধর্মে বিশ্বাসী নই তারা কেন পাবো না?’

sanha

তিনি আরও জানিয়েছেন, ২০১০ সালে করা তার আবেদন খারিজ করে দেন সরকারি কর্মকর্তারা। কিন্তু তিনি ২০১৭ সালে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে আবারও আবেদন করেন। যেহেতু স্নেহা সামাজিক শ্রেণিভিত্তিক কোনো সরকারি সুযোগসুবিধা ভোগ করেন না, তাই তার আবেদন গ্রহণ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন।

স্নেহাকে এই স্বীকৃতিপত্র দেয়ার বিষয়ে তিরুপাত্তুরের সাব-কালেক্টর বি প্রিয়ঙ্কা পঙ্কজাম বলেন, ‘আমরা তার স্কুল কলেজের সমস্ত নথি খতিয়ে দেখেছি। সেই সব নথিতে কাস্ট ও রিলিজিয়ন এই দুটি কলাম সর্বত্র ফাঁকা ছিল। তাই আমরা তার দাবিকে স্বীকৃতি দিয়েছি। তবে এর জন্য তাকে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে না।’

এই লড়াইয়ে স্নেহা পাশে পেয়েছেন তার স্বামী লেখক কে পার্থিবরাজাকে। নিজেদের এই পরম্পরা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে নিজেদের তিন মেয়ের স্কুলের ফর্মে কোনো রকমের জাতি বা ধর্মের উল্লেখ করেন না তারা।

এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।