শ্বেত ভাল্লুকের উপদ্রব, রাশিয়ার দ্বীপে জরুরি অবস্থা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০৯ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

রাশিয়ার একটি প্রত্যন্ত দ্বীপে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে মানব বসতিগুলোতে অসংখ্য শ্বেত ভাল্লুকের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রোববার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

নোভায়া যেমালয়া দ্বীপের কর্মকর্তারা বলছেন, এলাকাটিতে কয়েক হাজার মানুষ বসবাস করেন। কিন্তু ভাল্লুকগুলো আসতে শুরু করার পর অনেক মানুষ হামলা শিকার হয়েছেন। আবাসিক এবং সরকারি ভবনগুলোয় প্রবেশ করছে এসব ভাল্লুক।

জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে শিকার প্রাণিগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্বেত ভাল্লুক। খাবারের খোঁজে প্রায়ই এসব ভাল্লুক লোকালয়ে হানা দেয়। এসব ভাল্লুককে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণি বলে তালিকাভুক্ত করেছে রাশিয়া। তাই সেখানে শ্বেত ভাল্লুক শিকার করা নিষিদ্ধ।

কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশ যেসব পেট্রোল বা সিগনাল ব্যবহার করে এসব ভাল্লুক তাড়িয়ে থাকে, তা থেকে ভীতি কেটে গেছে এসব প্রাণির। ফলে এগুলো সামলাতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তারা বলছেন, ভাল্লুকগুলোকে তাড়ানোর অন্যসব পন্থা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের সামনে একটি পদ্ধতিই খোলা থাকবে। তা হচ্ছে, এগুলোর মধ্য থেকে একটি অংশকে মেরে ফেলা।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, দ্বীপ এলাকাটিতে যেখানে মূল বসতি রয়েছে সেখানে ৫২টি ভাল্লুক দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ছয় থেকে দশটি সবসময়েই সেখানে থাকছে।

১৯৮৩ সাল থেকে নোভায়া যেমালয়াতে কর্মরত রয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের প্রধান ভিগানশা মুসিন। এ সময়ের মধ্যে এলাকাটিতে এত বেশি মাত্রায় ভাল্লুকদের আসার ঘটনা দেখেননি বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচটির বেশি ভাল্লুক রয়েছে স্থানীয় সামরিক ঘাটিতে, যেখানে বিমান বাহিনী এবং বিমান প্রতিরক্ষার বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।’ তার সহকারী জানিয়েছেন, এ কারণে বসতিগুলোর স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়ে পড়েছে।

‘মানুষজন ভীত হয়ে পড়েছে, তাদের বাড়িঘর ছাড়তেও ভয় পাচ্ছে। তাদের প্রতিদিনকার রুটিন ভেঙ্গে পড়েছে, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুল বা কিন্ডারগার্টেনে পাঠাচ্ছেন না’-কথাগুলো বলেছেন স্থানীয় প্রশাসনের ডেপুটি অ্যালেক্সান্ডার মিনায়েভ।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উত্তর মেরুর সাগরের বরফ গলে কমে যাচ্ছে, ফলে মেরু অঞ্চলে থাকা শ্বেত ভাল্লুকগুলো তাদের শিকারের অভ্যাস পাল্টাতে বাধ্য হচ্ছে। তারা বরফের রাজ্য থেকে বেরিয়ে ভূমিতে এসে খাবার খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে, যা মানুষের সঙ্গে তাদের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি করছে।

২০১৬ সালে পাঁচজন রাশিয়ান বৈজ্ঞানিক ট্রোনোয় দ্বীপের একটি প্রত্যন্ত আবহাওয়া স্টেশনে বেশ কয়েকদিন শ্বেত ভাল্লুক দ্বারা অবরুদ্ধ থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন।

এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।