যে কারণে ট্রাম্প-কিমের বৈঠক ভিয়েতনামে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৩ পিএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

একটা সময় ভিয়েতনামে বেশ তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও সে যুদ্ধ শেষ হয়েছে ৪৪ বছর আগেই। তবুও সেই ভিয়েতনামকেই কেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প?

১৯৬৫ সালের মার্চে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের দানাং শহরে নেমেছিল মার্কিন সৈন্যদল। এর ৫৪ বছরের মাথায় সেই একই শহরে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ভিয়েতনামের সাবেক শত্রু যুক্তরাষ্ট্র আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধের সময়কার মিত্র উত্তর কোরিয়া।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন যে, উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তার বৈঠক হবে ভিয়েতনামে আগামী ২৮ ও ২৮শে ফেব্রুয়ারি। এই ভেন্যু হতে পারে দানাং বা হ্যানয়ে।

কমিউনিস্টরা শাসন করলেও ভিয়েতনাম কার্যত পুঁজিবাদী অর্থনীতি। আর দেশটি এখন একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার মিত্র দেশ।

দুপক্ষের চাহিদা পূরণে নিরপেক্ষ হিসেবেই দেশটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির ভিয়েতনাম বিশেষজ্ঞ কার্ল থ্যায়ার। তিনি বলেন, প্রথম বিষয় হলো শীর্ষ বৈঠকের সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্ষমতা আছে দেশটির। আর দু পক্ষই মনে করছে দেশটি নিরপেক্ষ।

অপরদিকে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিমের জন্য চীনের ওপর দিয়ে ভিয়েতনাম উড়ে যাওয়া নিরাপদ বেশি। আর খুব অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম একটি যাদের সঙ্গে একই সঙ্গে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের সুসম্পর্ক রয়েছে। আর এর মাধ্যমে উত্তর কোরীয় নেতা প্রমাণ করতে চাইছেন যে তার দেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।

কিম জং অন ভিয়েতনাম ডেভেলপমেন্ট মডেল নিয়ে পড়ালেখা করেছেন এবং এবার নিজে থেকেই দেশটির রূপান্তর দেখার সুযোগ পাবেন। ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধ আবার যুদ্ধের পর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা, মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা, এসব বিষয়ই এখন উত্তর কোরীয় নেতার জন্য আগ্রহের বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক থ্যায়ার।

যদি ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক সাফল্য কিম জং উনকে উৎসাহিত করে তাহলে সেই একই বিষয় হয়তো উদ্বুদ্ধ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকেও। দৈ মৈ নামে পরিচিত ১৯৮৬ সালে নেয়া সেই অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি ভিয়েতনামকে তৈরি করেছে এশিয়ার সবেচয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে।

অ্যাপেক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে ট্রাম্প ২০১৭ সালে ভিয়েতনাম সফর করেছেন এবং ভিয়েতনামকে একটি কমফোর্ট জোনই মনে হয়েছে তার। এছাড়া ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধে সমর্থন দিয়ে যে সহযোগিতা ভিয়েতনাম করেছে তাও স্বীকার করেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

ভিয়েতনামে যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠকের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। সিওলের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ভিয়েতনাম এক সময় লড়াই করলেও এখন দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু। আমরা মনে করি যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার নতুন ইতিহাস রচনার জন্য ভিয়েতনাম হবে চমৎকার একটি জায়গা।

টিটিএন/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।