একঘরে করে রাখা ঋতুমতী তরুণীর মৃত্যু
নেপালে ঋতুমতী নারীদের জন্য তৈরি ‘মাসিক কুঁড়েঘর’ নামে জানালাবিহীন একটি ঘরে দমবন্ধ হয়ে ২১ বছরের এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে নির্মম এ ঘটনার খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বর্বর ঘটনার শিকার ওই নারীর নাম পার্বতী বোগাতি। আর ঘটনাটি ঘটেছে নেপালের দোতি জেলায়। পার্বতী নামে ওই নারীর শাশুড়ি লক্ষ্মী বোগাতি তার পুত্রবধূকে সেখানে দেখতে যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন তার ছেলের বউ আর বেঁচে নেই।
নেপালের স্থানীয় দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্টকে মৃত তরুনীর শাশুড়ি বলেন, ‘আগামী কাল তার মাসিক শেষ হলেই এখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আর সে খুশি মনে দিনটির জন্য অপেক্ষাও করছিল। কিন্তু তার আগেই বেচারা চিরজীবনের মতো চোখ বুজলো।’
গত সপ্তাহেই দেশটিতে এমন আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ঋতুমতী এক নারীকে তার ছোট দুই সন্তানসহ জানালাবিহীন এই ‘মাসিক কুঁড়েঘরে’ রাখা হয়েছিল। সেখানে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ওই মা ও তার দুই শিশু সন্তানের।
পাবর্তীর মৃত্যু সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা ধারণা করছি তার মৃত্যু হয়েছে আগুন থেকে সৃষ্ট ধোঁয়ার মাধ্যমে। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে জানালাবিহীন ছোট্ট ঘরটিতে আগুন জ্বালান তিনি। আর জানালাবিহীন ঘর থেকে ধোঁয়া বের হওয়ার কোনো উপায় না থাকায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এভাবেই এক পর্যায়ে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার।
নেপালে প্রাচীন ‘চৌপাদি’ প্রথা অনুযায়ী মাসিকের সময় বা সন্তান জন্মদানের পরপর নারীদের ‘অশুদ্ধ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সময় নারীরা দুর্ভাগ্য বয়ে আনতে পারেন বলে মনে করে তাদেরকে ঋতুমতী নারীদের জন্য তৈরি ‘মাসিক কুঁড়েঘর’ কিংবা গোয়ালঘরে থাকতে বাধ্য করা হয়।
এসএ/এমএস