মার্কিন ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয় : শিক্ষার্থী গ্রেফতারে ভারতের ক্ষোভ
ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের খপ্পড়ে পরে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া ১২৯ ভারতীয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতারের ঘটনায় কূটনৈতিক প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষাতের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারত।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের আন্ডারকভার অ্যাজেন্টরা ভুয়া শিক্ষার্থী ধরার অংশ হিসেবে মিশিগান রাজ্যে ইউনিভার্সিটি অব ফার্মিংটন নামে একটি ক্যাম্পাসের প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করে। এতে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়, অর্থের বিনিময়ে দেশটিতে অভিবাসন সুবিধা পাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শিক্ষার্থীরা।
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের ফাঁদে পড়ে সেখানে ভর্তি হতে যায় ভারতীয় শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে মিশিগান থেকে অবৈধ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৯ ভারতীয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন : ১০ বছরের আবাসন ভিসা দেয়া শুরু করেছে আমিরাত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা বলছেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন; তারা জানতেন যে এখানে যেসব সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে তার সবই অবৈধ। ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই শিক্ষার্থীরা প্রতারণার শিকার হয়ে থাকতে পারেন।
শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনায় শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে। গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের কাছে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পৌঁছানোর অনুমতি দিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
যেভাবে লোভনীয় ফাঁদে পড়েন ভারতীয় শিক্ষার্থীরা
মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে মিশিগানে ওই ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। যেসব শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ভিসায় পড়তে গিয়ে দেশটিতে থাকতে চান, মূলত তাদের ধরার উদ্দেশে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের নিয়োগকৃত অান্ডারকাভার অ্যাজেন্টরা।
ইউনিভার্সিটি অব ফার্মিংটনের ওয়েবসাইটে কিছু ছবিতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাসের পাশাপাশি লাইব্রেরিতে পড়াশোনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দিচ্ছেন।
বিজ্ঞাপনে বলা হয়, বছরে সাড়ে ৮ হাজার ডলারের বিনিময়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট এবং ১১ হাজার ডলারে গ্রাজুয়েট কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টি ফেসবুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডার-সহ একটি ফেসবুক পেইজও চালু করে।
কিন্তু গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত বেশ কিছু নথি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশটির অভিবাসন ও কাস্টমস বিভাগের (আইসিই) নিয়োগকৃত আন্ডারকাভার অ্যাজেন্ট। ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হিসেবে যেসব ভবন দেখানো হয় তা মূলত ডেট্রয়েট শহরের একটি বিজনেস পার্কে আইসিইর অফিস।
এসআইএস/জেআইএম