পানিযুদ্ধের সম্মুখে ভারত-পাকিস্তান!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪৭ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বিশ্বে দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব সংকট মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তার মধ্যে পানির অভাব অন্যতম। এই পানি নিয়ে অচিরেই মুখোমুখি দাঁড়াতে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান।

পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই দেশের মধ্যে অচিরেই পানি নিয়ে বিবাদের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের দাবি, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে চলমান সহিংসতার কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে।

এর মধ্যে ইয়েমেন, সোমালিয়া, সিরিয়া অন্যতম। আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের জলবায়ু পরিবর্তনের ছায়া এশিয়াতেও প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। যার প্রধান শিকার হতে যাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। আশঙ্কার বিষয়, এই দুই দেশেরই পারমাণবিক সক্ষমতা রয়েছে।

পাশাপাশি অবস্থানরত দুই দেশের মধ্যে নদী ও সীমানা বণ্টন নিয়ে সংকট চলমান। ভবিষ্যতে সেটিই সম্মুখযুদ্ধে পরিণত হতে পারে পানির জন্য। ১৯৬০ সাল থেকে ভারত-পাকিস্তান সিন্ধু পানি চুক্তি মেনে আসছে। এই সিন্ধু নদ কাশ্মীর হয়ে ভারত থেকে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে।

চুক্তি অনুযায়ী, ভারত হয়ে হিমালয় থেকে পাকিস্তানে প্রবেশকারী ইরাবতী, শতদ্রু ও বিপাশা নদীতে কোনও স্থাপনার কাজ করতে পারবে না ভারত। একইসঙ্গে কাশ্মীর হয়ে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে প্রবাহিত হওয়া সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগায় পাকিস্তানের পানি ব্যবহারের অধিকার বেশি। এই ছয় মূল নদ-নদী দুই দেশে প্রবাহমান।

এদিকে পানি সংকট ও ছয় দশক ধরে চলমান কাশ্মীর সংকট একসঙ্গেই মাথাচাড়া দিচ্ছে। দুই দেশই পুরো কাশ্মীর উপত্যকার দাবিদার এবং আংশিকভাবে সেটি শাসন করছে। তবে ইতোমধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে পাকিস্তান। ভারত পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে এবং চন্দ্রভাগায় বাঁধ নির্মাণ করেছে।

ইসলামাবাদ চেম্বার অব কমার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৫১ সালে পাকিস্তানে জনপ্রতি ৫ হাজার ২৬০ ঘনমিটার পানি বরাদ্দ ছিল। ২০১৫ সালে এটি ৯৪০ ঘনমিটারে নামে। ২০২৫ সালে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৮৬০ ঘনমিটার।

অন্যদিকে, ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ১৯৫১ সালে ভারতে জনপ্রতি ৫ হাজার ১৭৭ ঘনমিটার পানি বরাদ্দ ছিল, ২০১৫ সালে সেটি ১৪৭৪ ঘনমিটারে নামে এবং ২০২৫ সালে এটি ১৩৪১ ঘনমিটার হবে।

জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ক্লাইমেট নেক্সাসের নির্বাহী জেফ নেসবিট বলেন, পানি চুক্তি রয়েছে এ দু'দেশের। সীমান্তবর্তী অন্যান্য সংকট সম্বলিত পাশাপাশি দু'টি দেশের পারমাণবিক সক্ষমতা থাকা ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

জেফ নেসবিট বলেন, মনে রাখতে হবে দুই দেশের ভৌগলিক অবস্থানকেও। কারণ পাকিস্তানের জন্য সিন্ধু পানির মূল উৎস। একইসঙ্গে দেশটির ৯০ ভাগ কৃষি এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংকট আসন্ন। এটিকে মোকাবেলা করতেই সচেষ্ট থাকতে হবে। ডিডব্লিউ।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।