আসিয়া বিবির মুক্তির রায় সুপ্রিম কোর্টেও বহাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩৮ এএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

ব্লাসফেমির অভিযোগ থেকে মুক্তি পাওয়া আসিয়া বিবির বেকসুর খালাস পাওয়ার রায় বহাল রেখেছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। গত বছর অক্টোবরে তাকে ধর্মদ্রোহের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখার আপিল করে কয়েকটি কট্টরপন্থী সংগঠন। মঙ্গলবার সেই আপিল খারিজ করে দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

এর ফলে আসিয়া বিবির বিদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে আর বাধা রইলো না।

পাক প্রধান বিচারপতি আশিফ সইদ খান খোসার বেঞ্চ এদিন পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করতে গিয়ে বলেন, শপথ ভঙ্গ করা এবং ভুল তথ্য দেয়ায় অভিযোগকারীদের কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারতো। কিন্তু মামলাটি সংবেদনশীল, তাই তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

অক্টোবরে পাক সুপ্রিম কোর্ট আসিয়া বিবিকে বেকসুর খালাস দেয়ার পরেই কয়েকটি কট্টরপন্থী সংগঠন ওই রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। আসিয়া বিবিকে মুক্তির রায় দেয়া বিচারপতিদের প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয়। পাশাপাশি ইমরান খান সরকারের বিরোধিতায় সরব হয়ে ওঠে বিক্ষভকারীরা।

এই রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন আগেই আট বছর কারাভোগ করা আসিয়া বিবি। কড়া নিরাপত্তার গোপন এক জায়গায় রয়েছেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমের কাছে আসিয়ার প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে তার এক বন্ধু জানান, আসিয়া বলেছেন- ‘নয় বছর পর আবারও মেয়েদের জড়িয়ে ধরতে পারব!’

প্রসঙ্গত, আসিয়ার মেয়েদের আশ্রয় দিয়েছে কানাডা। তাকেও আশ্রয় দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি।

অন্যদিকে প্রাণনাশের হুমকির জেরে দেশ ছাড়া হয়েছিলেন আসিয়ার আইনজীবী সইফুল মালুক। এ দিনের শুনানির জন্য দেশে ফিরেছেন তিনি। সইফুল এই রায়কে ‘পাকিস্তানের সংবিধান এবং আইনের জয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের জুনে আসিয়া বিবি একদল নারীর সঙ্গে কৃষি জমিতে কাজ করতেন। এ সময় এক বালতি পানি নিয়ে দলের অন্য নারীদের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। আসিয়া বিবি বালতি থেকে এক গ্লাস পানি নেন। এনিয়ে দলের অন্য নারীরা তার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারা বলেন, আসিয়া বিবি মুসলিম নন, সেজন্য তিনি মুসলিমদের বালতির পানিতে গ্লাস ডুবিয়ে পানি তুলতে পারেন না।

বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে তিনটি অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। ওই নারীরা আসিয়া বিবিকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দাবি জানান।

নিজ বাড়িতে মারধরের শিকার হন আসিয়া বিবি। ব্লাসফেমির দায়ে তাকে মারপিট করেন অভিযোগকারীরা। পরে তদন্তের পর আসিয়া বিবিকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান পুলিশ। আট বছর ধরে সাজা ভোগ করে গত বছরের নভেম্বরে তিনি মুক্তি পান।

এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।