খাশোগির মতোই পরিণতি হতে পারতো এই রাজনীতিবিদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২৬ এএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

সৌদি আরবের ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনীতিবিদ মা’ন আল জারাবা বলেছেন, প্রখ্যাত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির মতো তাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল রিয়াদ সরকার। সৌদি সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল হরকাতুল কারামা’র (মুভমেন্ট ফর ডিগনিটি) নেতা জারাবা আরবি সংবাদ সংস্থা ‘লেবানন ডিবেট’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর পার্স ট্যুডে।

সৌদির ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগি গত বছরের ২ অক্টোবর ব্যক্তিগত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। মা'ন আল-জারাবা বলেন, তিনি খাশোগিকে হত্যার ১০ দিন আগে লেবাননের সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন তার সঙ্গে তার একাধিক দেহরক্ষী না থাকলে তাকেও খাশোগির পরিণতি ভোগ করতে হতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জারাবার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন আগে ২২ সেপ্টেম্বর জারাবা বৈরুতে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন। সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা জারাবাকে বলেছিলেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে নিতে রাজি করানোর জন্য তার সঙ্গে কথা বলতে চান তারা। ইস্তাম্বুলের সৌদি কূটনীতিকরাও ব্যক্তিগত কাজ বাদ দিয়ে খাশোগির সঙ্গে একই ধরনের কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, বহু বছর ধরে শেখ মা’ন আল জারাবাকে কালো তালিকায় রেখে দেয়ার পর বৈরুতে সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা হঠাৎ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তারা তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে আলোচনা করতে চান। কয়েকটি ফোনালাপের পর জারাবা সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে রাজি হলেও সৌদি সরকারের নিষ্ঠুর আচরণের বিষয়টি বিবেচনা করে তিনি জানান, দূতাবাসে নয় বরং কোনো রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফেতে এই আলোচনা হতে হবে।

সূত্রটি জানায়, অনেক দর কষাকষির পর শেষ পর্যন্ত সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা দূতাবাসেরই মালিকানাধীন একটি ভবনে কাঙ্ক্ষিত বৈঠকের আয়োজন করেন। জারাবা তিনজন সশস্ত্র দেহরক্ষীসহ নির্ধারিত ভবনে যান এবং আরো সুসজ্জিত একদল দেহরক্ষীকে বাইরে প্রস্তুত থাকতে বলেন।

সূত্রটি জানায়, দূতাবাস কর্মকর্তারা জারাবার সঙ্গে সশস্ত্র দেহরক্ষীদের দেখে বিস্মিত হন। সেখানে তাদের নিরাপত্তার জন্য ভারী অস্ত্রে সজ্জিত দেহরক্ষী থাকার পরও তারা আশা করেছিলেন, জারাবা একাকী নিরস্ত্র অবস্থায় সেখানে উপস্থিত হবেন।

ওই বৈঠকে সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা জারাবাকে একথা বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, দেশে ফিরে গেলে রিয়াদ সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবে না। কিন্তু তাদের এ আশ্বাসে জারাবা সন্তুষ্ট হতে পারেননি এবং পরবর্তীতে এ ধরনের আরো বৈঠকের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেদিনের সাক্ষাৎ শেষ হয়।

সূত্রটি জানায়, ওই বৈঠকের ১০ দিনের মাথায় ইস্তাম্বুলে খাশোগি নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর জারাবা বুঝতে পারেন, কত ভয়ঙ্কর হত্যা পরিকল্পনা থেকে তিনি রক্ষা পেয়েছেন।

টিটিএন/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।