হাড়কাঁপানো শীতে নদীতে সাঁতার প্রতিযোগিতা
হাড়কাঁপানো শীতে আমরা গোসল করতেই ভয় পাই। ঠান্ডা পানি শরীরে ছিটিয়ে দিতেই পুরো শরীর শিউরে ওঠে। গায়ে কয়েক ছিঁটা পানি দিতেই শুরু হয় তোয়ালে দিয়ে শরীর মোছার তোড়জোড়। আর এই শীতে যদি আপনাকে বলা হয় সাঁতার কাটতে, আপনি সাঁতার কাটবেন?
আপনি এটা পারবেন কিনা তা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে এই মুহূর্তে জানিয়ে রাখি, ইতোমধ্যে ৭০ জন কিন্তু ঠিকই হিমশীতল পানিতে আদুল গায়ে সাঁতার কাটতে নেমে পরেছেন। ৪০০ মিটারের সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন তারা।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ জার্মানিতে। শনিবার দক্ষিণ জার্মানিতে বরফের মতো শীতল দানিউব নদীতে এই প্রতিযোগিতায় নিতে খাতায় নাম লেখান সব বয়সের প্রায় ১ হাজার ৯১৭ জন প্রতিযোগী। বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারীই নিওপ্রেন স্যুট, ভাইকিং হেলমেট এবং অন্যান্য রঙিন পোশাক পরেছিলেন। কিন্তু প্রবল এই ঠান্ডাকে অগ্রাহ্য করেই ৭০ জন প্রতিযোগী স্রেফ স্যুইম স্যুটটুকু পরে পানিতে নেমেছিলেন।
৫০ বছরে পা দিল শহরের সাঁতারের জনপ্রিয় এই প্রতিযোগিতা। সংগঠকরা জানান, শনিবার দানিউবের (জার্মান ভাষায় ডোনাউ) তাপমাত্রা ছিল ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রবল এই ঠাণ্ডায় ২০ জন প্রতিযোগী হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন এবং পানি থেকে তাদের টেনে বের করে আনা হয়। এমন হাড়জমানো ঠান্ডা পানিতে সাঁতার কেটে আসার পরে স্বেচ্ছাসেবীরা প্রতিযোগীদের গরম গরম স্যুপ খেতে দেন।
সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন মাইকেল মোয়েলা। তিনি জানান, তিনি নিওপ্রেম (এক ধরনের পোশাক) পরেই প্রথম ২ বছর সাঁতার কেটেছেন। কিন্তু গত ১৩ বছর ধরে খালি গায়ে সাঁতার কেটেই বেশি আনন্দ পাচ্ছেন তিনি। তার কথায়, ‘খালি গায়ে ঠান্ডা পানিতে সাঁতার কেটে তরতাজা লাগে বেশ!’
অন্য প্রতিযোগী থমাস গিসফেল্ড জানান, এই অভিজ্ঞতা যথেষ্ট আনন্দদায়ক। তিনি বলেন, ‘যখন শরীর স্বাভাবিক হয়ে যায় তখন দারুণ লাগে, শ্যাম্পেনের মতো মনে হয়, এরপর ঘণ্টাখানেকের জন্য মনে হবে হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছেন আপনি। আমি সত্যিই হয়তো বর্ণনা করতে পারছি না, কিন্তু এটা এমনই হয়।’
সংগঠকরা জানান, পোল্যান্ড, ফ্রান্স এবং চেক প্রজাতন্ত্রের মতো দেশের সাঁতারুসহ ১৬২টি সম্প্রদায়ের ২২২টি দল এই প্রতিযোগিতায় এই বছর অংশ নিয়েছে।
এসআর/এমএস