চীনে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বরখাস্ত করলেন ট্রুডো
চীনে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত জন ম্যাককলামকে বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এক বিবৃতির মাধ্যমে ট্রুডো রাষ্ট্রদূতকে তার পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেও এতে কোনো কারণ উল্লেখ করেননি তিনি।
চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়ের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা ওয়ানঝুকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে এক বিতর্কিত মন্তব্যের জের ধরে তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয়া হলো বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে গেল বছরের ১ ডিসেম্বর বিমানবন্দর থেকে ওয়ানঝুকে গ্রেফতার করে কানাডার কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে কানাডা-বেইজিংয়ের সম্পর্কে টানাপোড়েন।
মেং ওয়ানুঝুর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানে প্রযুক্তি বিক্রি করার অভিযোগ করা হয়েছে। তবে ওয়ানুঝু ও হুয়াওয়ে উভয়ই প্রথম থেকেই আনীত এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেছেন, ‘চীনে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য গত রাতেই আমি তাকে বলেছে।’
পাশাপাশি রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘মন্ত্রিসভায় বিভিন্ন পদ অলঙ্কিত করা ঝানু এই কূটনীতিক কানাডার জনগণকে অনেক কিছু দিয়েছেন। এ সেবার জন্য তাকে ও তার পরিবারের সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সম্প্রতি জনসম্মুখে মেং ওয়ানুঝু প্রসঙ্গে এক বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ওই মন্তব্যে তিনি বলেন, ‘মেং ওয়ানুঝুর প্রত্যার্পণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের বিষয়টি আমাদের দ্বিধাগ্রস্ত করেছে।’
অবশ্য পরের দিন তিনি তার মন্তব্যের বিষয়ে একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে বলেন, ‘তার ওই মন্তব্য করাটা ঠিক হয়নি। তার মন্তব্যটি ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং এজন্য তিনি অনুতপ্ত।’
তার পরদিন শুক্রবার তাকে বলতে শোনা যায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি এই অনুরোধ প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে কানাডার জন্য এটা চমৎকার হবে।’
মেংকে আটকের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক সম্পর্কে চীন ও কানাডার মধ্যে টানাহেঁচড়া শুরু হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে কানাডার এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে চীনের একটি আদালত।
সম্প্রতি চীন দুইজন কানাডিয়ান নাগরিককে আটক করে। ধারণা করা হচ্ছে, মেং ওয়ানুঝুর গ্রেফতারের বদলা হিসেবেই তাদেরকে আটক করেছে বেইজিং। তবে চীনা কর্মকর্তা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
বিবিসি বলছে, ওয়ানুঝুকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সঁপে দিতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানাতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছেন মার্কিন প্রসিকিউটররা। অপরদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করে নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা চাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র যেন প্রত্যার্পণের বিষয়ে কানাডাকে অনুরোধ না করে।
মেং ওয়ানঝু কানাডার আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। শুনানি শেষে শর্ত সাপেক্ষে তার জামিন মঞ্জুর করে কানাডার আদালত। তবে মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তার।
এসআর/এমএস