দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ পেতে ট্রাম্পের নয়া কৌশল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৫২ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের চার সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা আংশিক অচলাবস্থা নিরসনের চেষ্টা করছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার হোয়াইট হাউসে দেয়া এক বক্তব্যে অচলাবস্থা নিরসনের কিছু প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের দেয়া প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, অভিবাসন বিষয়ক তথাকথিক নীতি ড্রিমারস ও টেম্পরারি প্রোটেকশন স্ট্যাটাসের (টিপিএস) মেয়াদ বাড়ানো। যেসব তরুণ অল্প বয়সে তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন তাদেরকে ড্রিমারস বলা হয়।

তবে তিনি এখনো মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য তার দাবি করা ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ চাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। তবে বিরোধীদল ডেমোক্র্যাট ট্রাম্পের চাহিদামতো বরাদ্দ দিতে আগে থেকেই অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। যার পর দেশটির দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থা। তবে এবার কিছুটা নমনীয় হওয়া ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাবনাও প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এমন টানাপোড়েনের কারণে এবার কেন্দ্রীয় সরকার দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদের অচলাবস্থার রেকর্ড তৈরি করেছে। আর এই অচলাবস্থার প্রধান ভূক্তভোগী কেন্দ্রীয় সরকারের আট লাখ কর্মী। গত মাস থেকে তারা বেতন পাচ্ছেন না।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, অভিবাসীদের স্বাগত জানানোর গর্বিত ইতিহাস আছে যুক্তরাষ্ট্রের। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই পদ্ধতিটি খুব বাজেভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি এই পরিস্থিতির অবসান করতে চান। আর তাই কংগ্রেসকে কেন্দ্রীয় সরকারের অচলাবস্থা নিরসনের পথ বাতলে দিচ্ছেন।

তাছাড়াও তিনি কেন দেয়াল নির্মাণ করতে চান সে বিষয়ে যুক্তি দেন। তার দাবি, দেয়াল নির্মাণের কাজটি চলমান কোনো প্রক্রিয়া নয়। তিনি শুধু বিশেষ কিছু অঞ্চলে ইস্পাতের দেয়াল নির্মাণ করতে চান। আর এজন্য ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ চান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে ড্রিমারস বলে পরিচিত সাত লাখ অভিবাসী রয়েছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে কম বয়সেই এইসব ড্রিমারস অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। বর্তমানে দেশটির একটি কর্মসূচি অনুযায়ী তাদেরকে কাজ করার সুযোগ দেয়া হলেও নাগরিকত্ব দেয়া হয় নি। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই কর্মসূচি বাতিলের চেষ্টা করছেন।

তবে গতকালের বক্তব্যে ট্রাম্প এই কর্মসূচির বিষয়ে নমনীয়তা দেখিয়ে বলেছেন, তিনি ড্রিমারসদের জন্য এই কর্মসূচির মেয়াদ তিন বছর বাড়িয়ে দেবেন। যা তাদেরকে দেশটিতে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেবে। তাছাড়া টিএসপি ভিসাধারীদের ভিসার মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দেন তিনি।

বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ও বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিন লাখেরও বেশি টিএসপি ভিসাধারী ব্যক্তি। ক্ষমতায় আসার পর তাদের দেশটিতে অবস্থানের ব্যাপারেও বিরোধিতা করে আসছেন ট্রাম্প। তিনি এর আগে অভিবাসীদের এই সুবিধা বাতিলের কথাও বলেন।

ট্রাম্পের প্রস্তাবের মধ্যে আরও রয়েছে মানবিক বিপর্যয়ে জরুরি সহয়তার জন্য ৮০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান। তাছাড়া সীমান্তে ২৭৫০ জন এজেন্ট নিয়োগ ও অভিবাসীদের বিচারের জন্য ৭৫টি বিচারক দল গঠন। তার এই প্রস্তাবগুলো সমঝোতার ক্ষেত্রে অনেক যৌক্তিক বলে মনে করেন ট্রাম্প। এর মাধ্যমে বিশ্বাস ও সুনাম প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।