মনমোহনের বায়োপিক নিয়ে কেন এত বিতর্ক
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে নিয়ে বানানো ছবি ‘দ্য এক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে ভারতজুড়ে। অনেকেই বলছেন, দেশটির সাধারণ নির্বাচনের আগে এই ছবি মুক্তির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এছাড়া সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে খুবই ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এক সমালোচকের মতে, এটি আসলে খুবই বাজে একটা ‘প্রপাগান্ডা ফিল্ম’। সমালোচকরা বলছেন, এই ছবিটি হতে পারতো তার এই দুর্বোধ্য ব্যক্তিত্বের ওপর আলোকপাত করার একটা চেষ্টা। কিন্তু তার পরিবর্তে এটি আসলে তার ওপর আক্রমণের একটি চেষ্টায় পরিণত হয়েছে।
এই বায়োপিক যে একেবারে কিছুই হয়নি, তা নয়। ছবিটা অনেকটা ডকুমেন্টারি ধাঁচের এবং এটি দর্শকও টানছে বেশ। কিন্তু সমালোচকরা মোটেই খুশি নন। তারা এটিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করছেন। একজনের মতে, ‘এই ছবির নির্মাণশৈলিতে শিল্পের কোনো ছাপ নেই।’
আরেক সমালোচক লিখেছেন, ‘মনমোহন সিংকে এই ছবিতে মেরুদণ্ডহীন ক্রন্দনরত শিশুর মতো করে চিত্রিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার যেসব অর্জন তার কোনো স্বীকৃতি এতে নেই। কেবল ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির বিষয়টি ছাড়া।’
কলামিস্ট বীর সাংভি লিখেছেন, ‘কংগ্রেসবিরোধী প্রচারণার জন্য এই ছবি একটি সুবিধাজনক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে।’
আরেক সমালোচক শুভ্রা গুপ্তা একই মত জানিয়ে বলেছেন, ‘নির্বাচন যখন সামনে, তখনই যে এই ছবিটি মুক্তি দেয়া হলো এটা কোনো ‘এক্সিডেন্ট’ নয়।’
মনমোহন সিং ছিলেন ভারতের প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রী। তাই মনমোহন সিংকে এভাবে চিত্রিত করায় তারাও ক্ষুব্ধ।
ছবিটির নাম ‘দ্য এক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ তার কারণ, ২০০৪ সালে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রীর পদে যেতে অস্বীকৃতি জানালে প্রধানমন্ত্রিত্ব পান মনমোহন সিং। ছবিতে মনমোহন সিংয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউড জনপ্রিয় তারকা অনুপম খের।
মনমোহন সিং ছিলেন ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রীদের একজন। দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির স্থপতি বলে মনে করা হয় তাকে। তিনি ২০০৪ সাল হতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই দফায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এই সাবেক শিক্ষক এবং আমলা ছিলেন প্রচারবিমুখ এবং সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিতেন খুব কম।
বিএ/এমএস