সাংবাদিক হত্যায় বিতর্কিত ধর্মগুরু রাম রহিমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সাংবাদিক হত্যার দায়ে ভারতের স্বঘোষিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। বিতর্কিত এই ধর্মগুরু তার দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে ইতোমধ্যে ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
বৃহস্পতিবার হরিয়ানার পঞ্চকুলার বিশেষ আদালত রাম রহিমকে সাংবাদিক হত্যায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন দণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। ২০০২ সালে রাম রহিম দেশটির এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাম রহিমের তিন ভক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে গত শুক্রবার হরিয়ানার আদালত। ওই তিন সহযোগীকেও ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ৫১ বছর বয়সী রাম রহিম রোহতকের সুনারিয়া কারাগারে বন্দি রয়েছেন। দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণে অভিযুক্ত হয়ে ২০ বছরের সাজা ভোগ করছেন তিনি। ২০১৭ সালের আগস্টে হরিয়ানার বিতর্কিত এই ধর্মগুরুর রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন : শিষ্যদের সমকামী হতে বাধ্য করতেন রাম রহিম
ভক্তদের তাণ্ডব ও সহিংসতায় অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভক্তদের ভাঙচুরে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয়। বৃহস্পতিবারের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে হরিয়ানার পঞ্চকুলা ও সীরসা এলাকায় রাম রহিমের ডেরা স্বচ্ছ সওদায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। এছাড়া রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এনডিটিভি বলছে, দৈনিক পুরা সচ'র মালিক ও সাংবাদিক রাম চন্দ্র ছত্রপতিকে ২০০২ সালের অক্টোবরে নিজ বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। সীরসায় ডেরা স্বচ্ছ সওদার প্রধান কেন্দ্রে রাম রহিম কীভাবে নারী ভক্তদের যৌন নিপীড়ন করেন; সেবিষয়ে একটি প্রতিবেদন করেছিলেন রাম চন্দ্র।
সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় ২০০৩ সালে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে ২০০৬ সালে এই মামলা দেশটির শীর্ষ তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়। সাংবাদিক হত্যার এ মামলায় রাম রাহিমকে প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।
এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তার অপর তিন সহযোগী হলেন, কুলদীপ সিং, নির্মল সিং ও কৃষ্ণ লাল। সাংবাদিক হত্যায় এই তিন অভিযুক্ত বর্তমানে হরিয়ানার আম্বালা কারাগারে বন্দি রয়েছে।
এসআইএস/এমকেএইচ