শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করায় শাশুড়ির হাতে মার খেলেন এক নারী
শত বছরের প্রথা ভেঙে কেরালার শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করার মতো সাহস দেখাতে পারলেও শেষ রক্ষা হলো না কনকদুর্গার। ৩৯ বছর বয়সী এই নারী বাড়ি প্রবেশমাত্রই শাশুড়ির হাতে মার খেয়েছেন। ২ জানুয়ারি শরবীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেন তিনি।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাসের অংশ হওয়ার পর থেকেই কনকদুর্গা ও তার সহযাত্রী বিন্দু আমিনিকে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। সম্প্রতি বাড়ি ফিরলে তার শাশুড়ি তাকে মারধর করেন। তাকে ধারালো বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তার ক্ষত কতটা গভীর তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় শাশুড়ির বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, কনকদুর্গাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন এক সরকারি কর্মকর্তা। মালাপপুরাম শহরের কাছে এক হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে৷ পুলিশ তাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দানের ব্যবস্থা করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, প্রহৃত হওয়ার আগে কনকদুর্গা এক সাক্ষাৎকারে জানান, মন্দিরে প্রবেশের বিষয়টি তার পরিবারের কাউকেই তিনি জানাননি। এ কারণে পরিবারের সবাই তার ওপর ক্ষিপ্ত। কনক জানান, যদি তার পরিবারের লোকজন মন্দিরে প্রবেশের সিদ্ধান্ত জানতো, তাহলে তার পক্ষে আর প্রবেশ করা সম্ভব হতো না।
তিনি আরও বলেন, ‘আয়াপ্পা' ভক্ত হিসেবে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতীক হয়ে ওঠা শবরীমালা মন্দিরে তিনি প্রবেশ করেছেন।’ প্রসঙ্গত, শবরীমালায় আয়াপ্পা দেবতার পূজা করা হয়।
কেরালার রাজধানী থিরুভানান্তাপুরমে অবস্থিত এই মন্দিরটি। এটি ভারতের অন্যতম ধনী মন্দির। এই মন্দিরে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা হয়। এই মন্দিরের ভূগর্ভস্থ কক্ষ থেকে সম্প্রতি ১ লাখ কোটি রূপির সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে।
শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কোনো নারীর প্রবেশাধিকার নেই। এই নারীদেরকে ‘ঋতুবতী’ ও ‘অপবিত্র’ আখ্যা দিয়ে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে রেখেছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ।২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট ঋতুবতী নারীদের ওই মন্দিরে প্রবেশাধিকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায় দেয়।
গত ২ জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো কনক ও বিন্দু ওই মন্দিরে প্রবেশ করেন। এর পরপরই প্রধান পুরোহিত মন্দির শুদ্ধিকরণের জন্য বন্ধ করে দেন। শুদ্ধিকরণের পর মন্দির আবার খুলে দেয়া হয়।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিজেপি। ভাঙচুর করা হয় শতাধিক বাস। গ্রেফতার করা হয় ২ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে। মন্দিরে প্রবেশের দিন সংঘর্ষে বিজেপির এক কর্মী নিহত হন।
এসআর/পিআর