নাম পাল্টালেন সৌদির ধর্মত্যাগী সেই তরুণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৫৯ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

সৌদি পালানো ধর্মত্যাগী সেই তরুণী কানাডায় আশ্রয় পাওয়ার পর নিজের নাম পরিবর্তন করেছেন। রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুন নামের এই তরুণী তার নামের শেষাংশ আল কুনুন ফেলে দিয়েছেন। এখন থেকে তার নাম রাহাফ মোহাম্মদ।

মঙ্গলবার কানাডার টরোন্টো শহরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের নাম বদলের ঘোষণা দিয়েছেন কানাডায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পাওয়া সৌদি এই তরুণী।

সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানানোর মাধ্যমে শুরু করতে চাই। আমি সৌভাগ্যবতীদের একজন। আমি জানি, সৌদি আরবে অনেক দুর্ভাগা নারী রয়েছেন; যারা পালাতে গিয়ে গুম হয়েছেন অথবা তারা বাস্তবতার পরিবর্তন ঘটানোর জন্য কোনো কিছুই করতে পারেননি।

কুয়েতে পারিবারিক ভ্রমণে গিয়ে ১৮ বছর বয়সী এই তরুণী থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান; যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক ঝড় তোলে। পরে ব্যাঙ্ককের একটি হোটেলে নিজেকে আবদ্ধ রাখেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি অ্যাকাউন্ট খোলার পর সৌদিতে ফিরে গেলে পরিবারের সদস্যদের হাতে প্রাণনাশের শঙ্কা প্রকাশ করে টুইট করতে থাকেন রাহাফ।

টুইটে তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যরা তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন এবং তাকে নির্যাতন করেছেন। শুধু তাই নয় তার সঙ্গে দাসীর ন্যায় আচরণ করা হচ্ছে বলে জানান। তার এই আকুতি অনেক মানবাধিকার কর্মী ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার নজরে আসে। তিনি প্রথমে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় নেয়ার চিন্তা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে কানাডা এগিয়ে এসে সৌদি এই তরুণীকে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দেয়।

শনিবার টরোন্টো পৌঁছালে রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুনকে স্বাগত জানান কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। গণমাধ্যমের সামনে তাকে ‘প্রচণ্ড সাহসী নতুন কানাডীয়’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি।

এই তরুণীর আশ্রয়, মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সাম্প্রতিক ধরপাকড় ও মানবাধিকারের রেকর্ড ঘিরে অটোয়া এবং রিয়াদের মধ্যে ব্যাপক কূটনৈতিক সঙ্কট শুরু হয়েছে। সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড ঘিরে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছে সৌদি আরব। এর মাঝেই ধর্ম ত্যাগ করে ওই কিশোরীর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে নতুন করে সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।

অস্ট্রেলিয়ার একটি সরকারি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাহাফ মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি মনে করি সৌদি প্রশাসনের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে পালানো নারীর সংখ্যা আরো বাড়বে। আমি নিশ্চিত যে, আরো অনেক নারী সৌদি থেকে পালাবেন। আমি আশা করি, আমার এ গল্প এখন থেকে অন্য নারীদের সাহসী এবং স্বাধীন হতে উৎসাহিত করবে।

সূত্র : এএফপি।

এসআইএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।