মমতা কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৪৯ এএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৯

১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে মহাসমাবেশের করবে মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের প্রত্যাশা, দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী মহাজোট গড়ার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী, তার একটা চিত্র দেখা যাবে এ সমাবেশে। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন?

গত কয়েক মাসে একাধিক আঞ্চলিক দলের নেতা কলকাতায় গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের মধ্যে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফিরে আসা তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির কে চন্দ্রশেখর রাও রয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা আছেন।

গত বছর আগস্টে দিল্লিতে কংগ্রেসের ডাকে যে বিজেপি বিরোধী বৈঠক হয়েছিল সমমনস্ক রাজনৈতিক দলগুলোর সেখানেও মমতা উপস্থিত ছিলেন এবং বিজেপিকে হারাতে মমতা যে ফরমুলা বেঁধে দিয়েছেন, সেটি মোটামুটি সর্বদলস্বীকৃত রাস্তা হিসেবে গ্রাহ্য হয়েছে।

সেখানে বিজেপি বিরোধী ভোট যাতে ভাগ না হয়ে যায় -সেদিকেই নজর দিতে বলেছেন মমতা। মমতার ফরমুলা, যে দল যেখানে শক্তিশালী, বিজেপির বিরুদ্ধে সেখানে তারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। বাকি দলগুলো এবং তাদের ভোট থাকবে সহযোগী শক্তি হিসেবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের নির্বাচনে এ ফরমুলা সবসময় কার্যকর না হলেও সমবেতভাবে বিজেপিকে হটানোর লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এ রণকৌশল একরকম মেনে নিয়েছে।

মমতা এমন মহাজোটের উদ্যোগ এবারই যে প্রথম নিচ্ছেন তা নয়। ২০১৪ সালেও মমতা কংগ্রেসকে বাইরে রেখে এ রকম একটি বিজেপি বিরোধী জোটের ডাক দিয়েছিলেন। তবে সেই জোট সফল হয়নি।

এবার এ মুহূর্তে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কোনো মহাজোট গড়ার সম্ভাবনার কথা মমতার পক্ষে ভাবা সম্ভব নয়। কারণ, সদ্য হয়ে যাওয়া পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ফল এবং বিরোধী নেতা হিসেবে জাতীয় সংসদে রাহুল গান্ধীর নিজেকে ক্রমশই আরও শক্তশালী করেছে।

তবে এবার প্রশ্ন হচ্ছে মমতার ফরমুলা মেনে, বিজেপি বিরোধী ভোটব্যাংক অক্ষত রেখে লোকসভা নির্বাচনে যদি সত্যিই বিজেপিকে হারানো সম্ভব হয়, তাহলে মমতা ব্যানার্জির নামই কি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হবে?

আঞ্চলিক রাজনীতি থেকে সরাসরি সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রধান আসনে ওঠে আসার ঘটনা আগেও ঘটেছে এইচ ডি দেবগৌড়া এবং ইন্দ্রকুমার গুজরালের ক্ষেত্রে। জাতীয় রাজনীতিতে নেহাতই অপরিচিত নাম ছিলেন তারা। সেখানে মমতার রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। তিনি যদি একদিন দেশের প্রদানমন্ত্রী হন, নেহাত খারাপ হবে না বলে তার অনেক বিরোধীও স্বীকার করছেন।

কিন্তু প্রশ্ন অন্যখানে। যে আঞ্চলিক দলগুলোর ভরসায় মমতা মহাজোট গড়তে উদ্যোগী, তাদের নেতা-নেত্রীরাও সবাই ওই একটি আশা নিয়েই অপেক্ষা করছে। অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু নাইডু বারবার নিজেই প্রসঙ্গটা তোলেন এবং স্বেচ্ছায় ঘোষণা করেন, কে প্রধানমন্ত্রী হবে, সেটা পরের ব্যাপার।

এছাড়া উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী, অখিলেশ যাদব, তেলেঙ্গানায় চন্দ্রশেখর রাও, সবাই একই স্বপ্ন দেখে আসছেন। আর দল হিসেবে কংগ্রেসের যে উত্থান শুরু হয়েছে তা যদি ২০১৯ লোকসভা ভোট পর্যন্ত বজায় থাকে এবং কংগ্রেসের নির্বাচনী সাফল্য আরও মজবুত হয় তাহলে রাহুল গান্ধীই হতে পারেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।