স্বপ্নজয়ী সুভাসিনী


প্রকাশিত: ০৬:১৯ এএম, ২২ আগস্ট ২০১৫

মানুষের ইচ্ছাশক্তি মানুষকে কোথা থেকে কোথা নিয়ে যেতে পারে তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার হংসপুকুর এলাকার সুভাসিনীকে দেখেই বুঝা যায়। অদম্য ইচ্ছা আর মানুষের প্রতি গভীর ভালবাসা থাকলেই যে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায় তার বাস্তব উদাহরণ সুভাসিনী।

নিজের বয়স যখন ১২ তখন বাল্য বিবাহের শিকার হন তিনি। কিন্তু বিধি বাম মাত্র ২৩ বছর বয়সে স্বামীকেও হারাতে হয় তাকে। তারপর দুই ছেলেকে নিয়ে শুরু হয় তার জীবন যুদ্ধ। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে বেশ কয়েক বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে থালা-বাসন মেজেছেন তিনি। সকল প্রকার ভোগ বিলাসিতাকে বিসর্জন দিয়ে টাকা জমিয়েছেন একটি স্বপ্ন পূরণের জন্য। আর সেই স্বপ্নটি ছিলো গরিব মানেষের জন্য হাসপাতাল তৈরি করা। যাতে কোনো গরিব মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়।

নিজের কষ্টের জমানো এক লাখ রুপি দিয়ে হংসপুকুরে এক একর জমি কিনেন সুভাসিনী। তবে জমিটা নিজের মাথা গোঁজার জন্য কেনেননি। কিনেছেন গরিব মানুষের চিকিৎসার জন্য।



অভাব অনটনের সংসারে দুই ছেলের পড়াশুনার খরচ চালাতে না পেরে ছোট ছেলেকে অনাথ আশ্রমে দিয়েছিলেন সুভাসিনী। ততদিনে ছোট ছেলে অজয় ডাক্তারি শেষ করে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে একটি ছোট খুঁড়ে ঘর তৈরি করেন। অজয়ে সঙ্গে যোগ দেন তার বন্ধুরা। প্রথমদিনেই তারা ২৫২ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। তারপর থেকে রাজ্যের সকল গরিবের আস্থার অন্যতম একটি জায়গায় পরিণত হয় তার এই হাসপাতাল।

একজন সৎ, নিষ্ঠাবান মানুষের মানবকল্যাণের স্বপ্ন পূরণের সংকল্প এবং প্রয়াস দেখে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন৷ ১৯৯৩ সালের সেই ছোট্ট কুঁড়ে ঘরটি তাই আজ আয়তন এবং খ্যাতিতে অনেক বড়। তিন একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে সুভাসিনীর স্বপ্নের সেই হাসপাতাল।

২৩ বছর বয়সে বৈধব্য বরণ করা সুভাসিনী, ঘরে ঘরে গিয়ে থালাবাসন মেজে, পথে পথে শাক-সবজি বিক্রি করে এক পয়সা দু`পয়সা করে জমানো সুভাসিনী তার স্বপ্নের হাসপাতালটির নাম রেখেছেন হিউম্যানিটি হসপিটাল`।

এসকেডি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।