এক বছরেই সাত ঘূর্ণিঝড়, চারটিই শক্তিশালী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৩ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮

আবার নিম্নচাপ এবং তা থেকেই বঙ্গোপসাগরে আবার তৈরি হতে যাচ্ছে একটি ঘূর্ণিঝড়। দিল্লির আবহাওয়া অফিস বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে দানা বাঁধা গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবারের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়ে ছুটে যাবে অন্ধ্রপ্রদেশ-তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে। চলতি বছরে এই নিয়ে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় (আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর যার অন্তর্ভুক্ত) সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে যাচ্ছে। এক বছরে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির ঘটনা বিরল।

তথ্য বলছে, গত চার দশকের মধ্যে ১৯৮৫ সালে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর মিলিয়ে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। তার মধ্যে জোরালো ঘূর্ণিঝড় ছিল মাত্র দু’টি। এ বার ইতিমধ্যে তৈরি হওয়া ছয়টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে চারটিই প্রবল বা অতিপ্রবল গোত্রের। গত এক দশকে কোনো বার ছয়টি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়নি। এখন যে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে, তার জন্য বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করছেন পরিবেশবিদ ও আবহাওয়াবিদদের একাংশ।

জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইন্টার্ন-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে। তারা সর্বশেষ রিপোর্টে জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। উত্তর ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় পরপর ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি সেই গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেই হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সুগত হাজরা বলছেন, ‘বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।’ তার ব্যাখ্যা, সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে তাপমাত্রার বদলের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় তৈরির নিবি়ড় সম্পর্ক আছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এই দু’টি প্রাকৃতিক প্রবণতাকে প্রভাবিত করে। এ বছর তার মধ্যে এল নিনো (প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি) পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

পরিবেশবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও সেগুলো সেভাবে শক্তিশালী ছিল না। কিন্তু ইদানীং ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে সেগুলো শক্তিশালীও হচ্ছে। ২০১৩ সালে এক বছরে পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। তার চারটিই ছিল শক্তিশালী। এ বারেও চারটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে।

এখন যে ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হতে পারে সেটা শক্তিশালী হবে কি না সে বিষয়ে আগেই কোনো মন্তব্য করতে রাজি না বিজ্ঞানীরা। তারা জানান, ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হওয়ার পরে তার হালহকিকত আরও নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব।

এই শক্তি বৃদ্ধির পিছনেও বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করছেন পরিবেশবিদেরা। তারা বলছেন, সাগরজলের উষ্ণতা বাড়লে তা ঘূর্ণিঝড়কে জলীয় বাষ্প জুগিয়ে শক্তির জোগান দেয়।

এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।