শরণার্থী চুক্তিতে ১৯২ দেশের সমর্থন, না শুধু যুক্তরাষ্ট্রের
অভিবাসন বিরোধী নীতিতে অটল আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্যাম্প। এ কারণে মরক্কোর ম্যারাকেশে অভিবাসন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির বিরোধিতা করতে পারে একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এ বিষয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সবাই এই চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। কেবলমাত্র এখনও চুক্তির বিষয়ে একমত পোষণ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
শুধু অভিবাসন চুক্তি প্রত্যাখ্যান নয় শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক চুক্তিও অনুমোদন করেনি যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাবিত এই চুক্তি ‘মার্কিন অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়' বলে মনে করে ট্রাম্প প্রশাসন।
চুক্তিটি মানতে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই সদস্য রাষ্ট্রগুলোর। পাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনেরও কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, এই চুক্তিতে এমন কিছু নীতিমালা রয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই শরণার্থী সংকট মোকাবেলার মাধ্যমে প্রাণহানি রোধ করতে পারবে। তবে এর সর্বোচ্চ ফল পেতে প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন।
শরণার্থী সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বিশ্বজুড়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন বার্লিনভিত্তিক শরণার্থী বিশ্লেষক মার্টিন এঙ্গলার।
তিনি বলেন, ‘‘ট্রাম্প প্রশাসন পুনর্বাসিত অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে এনেছে। এ ধারা ট্রাম্পের মেয়াদের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এবং ট্রাম্প নিজে বিশ্বজুড়ে এ বিষয়ক যে নীতির প্রচার করছেন, সেটিই সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়। অনেক সরকার এখন তার অবস্থানকে উদাহরণ হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।''
জাতিসংঘের অভিবাসন চুক্তিতে অর্থনৈতিক অভিবাসীদের ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে একটি নির্দিষ্ট মান বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনীতিবিদরা এর বিরোধিতায় সরব হয়েছেন।
তাদের অভিযোগ, এই চুক্তির ফলে কোনো রাষ্ট্রের নিজস্ব আইন ডরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রণহীন অভিবাসনের পথ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। চুক্তির খসড়ায় অবশ্য স্পষ্ট করেই বলা আছে, প্রতিটি দেশ নিজেদের অভিবাসন নীতি নির্ধারণ করবে।
অন্যদিকে জাতিসংঘের প্রস্তাবিত শরণার্থী চুক্তিতে তুলে ধরা হয়েছে যুদ্ধ ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে যাঁরা সীমেন্ত পাড়ি দিচ্ছেন, তাদের কথা। এই চুক্তির মূল লক্ষ্য, শরণার্থীদের জীবনমানের উন্নয়ন, গ্রহীতা রাষ্ট্রের সহায়তা এবং শরণার্থীদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা করা।
২০১৫ সালে শরণার্থী সংকট তীব্র আকার ধারণ করার পর থেকে এই চুক্তির কাজ শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সে বছরই সবচেয়ে বড় শরণার্থীর ঢল নামে। ২০১৫ ও ২০১৬- এই দুই বছরে ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে সংকট মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে জার্মানি। তবে অনেক জার্মানই বিষয়টিকে মেনে নিতে পারেননি। ফলে উত্থান ঘটে শরণার্থী বিরোধীদের। সূত্র : ডয়েচে ভেলে
এমএমজেড/জেআইএম