জেল হতে পারে ট্রাম্পের!
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য অ্যাডাম শিপ বলেছেন, ক্ষমতা হারানোর পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেলে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার সময় অবৈধভাবে অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেয়ার জন্য ট্রাম্পের জেল হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে তিনি মনে করেন।
বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের এ কংগ্রেসম্যান বলেন, ‘গত সপ্তাহে প্রসিকিউটররা যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তা থেকে এমন ধারণাই করা হচ্ছে।’
রোববার মার্কিন সিবিএস টেলিভিশন চ্যানেলকে সিনিয়র কংগ্রেসম্যান অ্যাডাম শিপ এসব কথা বলেন। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ইন্টেলিজেন্স কমিটির পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারেন তিনি।
অ্যাডাম শিপ বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যেদিন ক্ষমতা ছাড়বেন সেদিন তার জেলে যাওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে। বিচার বিভাগ তাকে জেলে নিতে পারে এবং ট্রাম্প হতে পারেন প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি জেলে যাবেন।’
দুই পর্ন তারকার সঙ্গে ট্রাম্পের অবৈধ যৌন সম্পর্ক ছিল-এমন কথা গোপন রাখার জন্য ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় অর্থের বিনিময়ে ওই দুই নারীকে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের হয়ে দুই নারীকে অর্থ পরিশোধ করেছিলেন তারই ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেন। কোহেনকে আগেই বরখাস্ত করেছেন ট্রাম্প।
সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য জেরল্ড ন্যাডলার বলেন, ‘ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণায় কয়েকজন নারীকে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর তিনি এটা করেছিলেন ওই নারীদের মুখ বন্ধ রাখতে। এটা প্রমাণিত হলে এটা অভিসংশনযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’
‘দ্য হাউস জুডিশিয়ারি কমিটি’র হবু চেয়ারম্যান ন্যাডলার বলেন, ‘যদিও কাজগুলো তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে করেছেন। কিন্তু তিনি এগুলো করেছেন জালিয়াতি করে প্রেসিডেন্ট হওয়ার উদ্দেশ্যেই। তিনি আমেরিকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিপাবলিকান কংগ্রেস এর আগে এসব অভিযোগ থেকে প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করেছেন। তবে নবগঠিত কংগ্রেস এবার আর তাকে রক্ষা করবে না।’
ইতোমধ্যে ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী কোহেনের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। শুক্রবার নিউইয়র্কের আইনজীবীরা কোহেনের শাস্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন। আগামী বুধবার এ সাজা ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচনী প্রচারণার আর্থিক আইন, কর ফাঁকি ও কংগ্রেসকে মিথ্যা তথ্য দেয়ার কারণে তার কারাদণ্ড পাওয়া উচিত বলে মনে করেন আইনজীবীরা।
ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার দু’মাসের মাথায় ২০১৭ সালের মার্চে মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়ে তদন্ত শুরু করে দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। এ নিয়ে ট্রাম্প প্রকাশ্যে বারবার তার আইন কর্মকর্তাদের সমালোচনা করে আসছিলেন। হঠাৎ বরখাস্ত করেন সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কমিকে। এরপর ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা শিবির ও মস্কোর মধ্যে সম্ভাব্য যোগাযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলার। আইন মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে বিস্তৃত এই তদন্তের কারণে ট্রাম্পের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। একে একে প্রাপ্ত সব তথ্য-প্রমাণ প্রকাশ করছেন মুলার।
মুলারের বরাত দিয়ে সোমবার প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রাম্পের ১৮ মাসের প্রচারণা এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার সময়েও তার অন্তত ১৪ সহযোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রুশ কর্মকর্তারা।
সূত্র: চ্যানেল নিউজ এশিয়া, পার্সট্যুডে
এসআর/জেআইএম