এক চুমুতেই সর্বনাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৭ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮

কিরা। ইংল্যান্ডের বাসিন্দা কেলি ইনেসন (৩০) ও তার বাগদত্তা থমাস কামিনসের সন্তান। শিশুটি জন্ম নিয়েছিল মাত্র ১৪ দিন আগে। অথচ এর বেশি সময় সে আর পৃথিবীর আলো দেখতে পেল না। পৃথিবী ছেড়ে পরপারের উদ্দেশে পাড়ি জমাতে হলো তাকে। তবে তাকে যে কারণে পৃথিবী ছাড়তে হলো তা রীতিমতো বিস্ময়ের।

শিশুটির বয়স যখন মাত্র ১০ দিন, তখন এক বহিরাগত আদর করে তার গালে চুমু দিয়েছিল। সেই চুমুই তার শরীরে জীবাণু বাসা বাধার সুযোগ করে দিল। হার্পস সিমপ্লেক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হলো সে। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার চারদিন পরই মারা যায় শিশুটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আক্রান্ত শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোমায় ছিল সে। ওইসময় অবশ্য ডাক্তার বলেছিল, যদি সে এই যাত্রায় বেঁচেও যায়, তবে ভবিষ্যতে তার মস্তিষ্কের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

শিশুটির মায়ের আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। শিশুটি মারা যাওয়ার পর তিনি তার এ করুণ কাহিনী গণমাধ্যমে শেয়ার করছেন। ব্রিটিশ দৈনিক ট্যাবলয়েড ডেইলি স্টারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক ছিলাম। যদি কাউকে দেখে নোংরা মনে হতো কিংবা তিনি হাত না ধুয়ে আসতেন তাহলে তাকে আমার সন্তানের কাছে আসতে দিতাম না। তবে আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনি যে, একটি মাত্র চুমু আমার বাচ্চাকে শেষ করে দেবে। আমি চাই না আর কোনো মা-বাবা এ রকম ঘটনার সম্মুখীন হোক।

যখন শিশুটি হঠাৎ করে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল তখন তার মা-বাবাকে বলা হলো- ‘হার্পস সিমপ্লেক্স ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি হয়তো শিশুটিকে চুমু দিয়েছে আর এতেই সে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।’

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্পস শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ রোগে কেউ আক্রান্ত প্রথমে তার ত্বকে ফোস্কা দেখা দেয়। পরে এ ফোস্কা ঘাতে রূপ নেয়। পরবর্তীতে এ ঘাম পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বলছে, এ রোগে আক্রান্ত প্রতি তিনজনে একজন শিশু মারা যায়, যদিও তাদের চিকিৎসা করানো হোক না কেন।

এ বিষয়ে হার্পস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ম্যারিয়ান নিকোলসনের পরামর্শ হলো-‘দয়া করে অন্যের শিশুদের কিস করবেন না। হতে পারে আপনি এ রোগের জীবাণু নিজের শরীরে বহন করছেন। আপনি যখন কোনো শিশুকে কিস করবেন তখন আপনার অজ্ঞাতসারেই এই রোগের জীবাণু ওই শিশুর শরীরে প্রবেশ করবে।’

প্রায়ই একই পরামর্শ দিয়েছেন মারা শিশুটির মা। তিনি তার ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে লিখেছেন-‘সময়মতো হাত ধৌত করুন আর বাচ্চাদের কিস করবেন না।’

এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।