আদেশের বিরুদ্ধে লতিফের আপিল : শুনানি রোববার


প্রকাশিত: ০৮:২৪ এএম, ২০ আগস্ট ২০১৫

ইসির কার্যকারিতা বিষয়ে হাইকোর্টের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আগামী ২৩ আগস্ট রোববার এ আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এ আপিলটি করেন।
 
আগামী রোববার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে তার আবেদনের ওপর শুনানি হবে। ওইদিন দল থেকে বাদ পড়ার কারণে তার সংসদ সদস্যপদ থাকবে কি-না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।  
 
নির্বাচন কমিশনের শুনানির এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে লতিফ সিদ্দিকীর করা রিট আবেদন বৃহস্পতিবার সকালে খারিজ করে দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
 
ওই আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদুল আলম  সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন লতিফ সিদ্দিকীকে যে নোটিশ দিয়েছে, তাতে আইনের কোনো বত্যয় ঘটেনি। বিষয়টি মীমাংসা বা নিষ্পত্তির এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের হাতে।
 
রিট আবেদনকারীর কোনো বক্তব্য থাকলে তিনি তা কমিশনের শুনানির সময় উপস্থাপন করতে পারেন। এসব দিক বিবেচনা করে আদালত রিট আদেনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন।’
 
এরপর হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের নোটিশ স্থগিতের আবেদন করেন লতিফের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি ২৩ অগাস্ট শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
 
একই দিনে নির্বাচন কমিশনে শুনানির তারিখ থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আপিল বিভাগ বসে সকাল ৯টায়। আর নির্বাচন কমিশন যে নোটিশ দিয়েছে তাতে ১১ টায় শুনানিতে থাকতে বলেছে। সুতরাং আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তেই বোঝা যাবে, তাকে যেত হবে কি না।’
 
এর আগে সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শুনানির এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দায়ের করা রিট আবেদন শুনানি শেষে বিচারপতি এসএম এমদাদুল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তা খারিজ করেন।
 
গত বুধবার আদালতে লতিফের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদুল আলম।
 
রিট আবেদনে নির্বাচন কমিশন, আইন সচিব, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও নির্বাচন কমিশনের উপসচিবকে (আইন) বিবাদী করা হয়।
 
লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে রিট আবেদনটি গত ১৬ আগস্ট রোববার বিকেলে হাইকোর্টের শাখায় দাখিল করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এর আগে ওই বেঞ্চ থেকে রিট আবেদনটি দায়েরের অনুমতি নেন তিনি।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সেদিন জানান, পার্লামেন্ট মেম্বরস (ডিটারমিনেশন অবডিসপুটস) অ্যাক্ট ১৯৮০-তে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংবিধানের ৬৬ (৪) অনুচ্ছেদে স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে, সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে কোনো বিবাদ আসলে নির্বাচন কমিশন তা নিষ্পত্তি করতে পারবেন।
 
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় লতিফ সিদ্দিকী হজ, তাবলিগ জামায়াতসহ অন্যান্য বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এরপর প্রথমে মন্ত্রিসভা থেকে এবং পরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে।
 
লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারের ৯ মাস পর গত ৭ জুলাই জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দিয়ে তা জানান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
 
চিঠিটি পর্যালোচনা করে স্পিকার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে ১৩ জুলাই চিঠি দেন।
 
সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে ২ আগস্টের মধ্যে জবাব চেয়ে ১৬ জুলাই নির্বাচন কমিশন লতিফ সিদ্দিকী ও আওয়ামী লীগকে চিঠি পাঠায়। নির্ধারিত সময়ের শেষদিনে উভয়পক্ষ প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাদের জবাব দেন ইসিতে।
 
পরে আওয়ামী লীগ এবং বহিষ্কার হওয়া নেতার জবাব পর্যালোচনা করে কমিশন আগামী ২৩ আগস্ট তাদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় ইসির শুনানির এখতিয়ারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। যা বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিলেন আদালত।

# লতিফ সিদ্দিকীর আবেদন খারিজ

এফএইচ/এসএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।