লাইন ধরে গৃহকর্মীকে বিদায় জানাল সৌদি পরিবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮

ভারতীয় নাগরিক মিডো শিরিয়ান। সৌদি আরবে কাটিয়েছেন দীর্ঘ ৩৫ বছর। এবার তার বিদায়বেলা। তবে তাকে বিদায় জানাতে নিয়োগকারী পরিবার যা করল তা রীতিমতো বিস্ময়কর ও নজিরবিহীন।

জাঁকজমক এক আয়োজনের মাধ্যমে তাকে বিদায় জানিয়েছে সৌদি আরবের অল শেমরি নামে একটি পরিবার। লাইনে দাঁড়িয়ে কর্মচারী মিডোকে আলিঙ্গন করে পরিবারটির ছোট-বড় সবাই। প্রত্যেকের হাতে ছিল উপহারসামগ্রী। আলিঙ্গন করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে চোখ ভিজিয়েছেন তারা।

গত ৩০ নভেম্বর ছবিসহ এ ঘটনাটি টুইটারে শেয়ার করেন ইয়াসির আল নাজিহ নামে হেইল শহরের এক অধিবাসী। সৌদির আল অ্যারাবিয়া টিভি চ্যানেলের বরাত দিয়ে সৌদি গ্যাজেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৫ বছর ধরে ওই পরিবারের কাছেই ছিলেন মিডো। সৌদি আরবের উত্তর প্রান্তের শহর হেইল আর অল-জউফের পাহাড়ি এলাকায় অল শেমরি পরিবারের একটি গেস্ট হাউস রয়েছে। সেখানেই কাজ করতেন মিডো শিরিয়ান।

আশির দশকে ভারত থেকে জীবিকার উদ্দেশে সৌদি আরব পাড়ি জমান মিডো শিরিয়ান। প্রথম থেকেই ওই পরিবারের কাজে নিযুক্ত হন তিনি। গেস্ট হাউসে আসা পর্যটকদের খাবার পরিবেশনসহ তাদের দেখাশোনার কাজ করতেন মিডো।

এভাবে সততা ও বিশ্বস্ততা দিয়ে সৌদির অল শেমরি পরিবারের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে মিডোর। সে কথা ওই পরিবারের সবার মুখে মুখে। মিডো সম্পর্কে অল শেমরি পরিবারের কর্তা আওয়াদ অল শেমরি জানান, ওর সততা, ঔদার্য ও আনুগত্যে আমরা মুগ্ধ। ও এতদিন ধরে আমাদের যে সেবা দিয়ে গেছে, তাতে আমরা ওকে এ পরিবারের একজন সদস্যই মনে করি। আমরা তার জন্য যা করেছি তা নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকেই করেছি।

এই ৩৫ বছরে মিডো একদিনের জন্যও কোনো অসুবিধা বুঝতে দেয়নি পরিবারটিকে। তবু মিডোকে বিদায় জানাতেই হবে তাদের। শারীরিক অসুস্থতার কারণে জন্মভূমি ভারতে একেবারে ফিরে আসতে চাইছেন মিডো। আর সে কারণেই এমন আয়োজন করে মিডোকে বিদায় জানিয়ে সম্মান দেখাল সৌদি পরিবারটি।

বিদায় জানানোর মুহূর্তে মোটা অঙ্কের টাকা মিডোর হাতে তুলে দেন আওয়াদ অল শেমরি। শুধু এটিই নয়, ভারতে বসে জীবদ্দশায় মিডো মাসিক পেনশনও পাবে বলে জানায় ওই পরিবার।

এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।