ধর্ষণ থেকে মাকে বাঁচিয়ে প্রাণ দিলো ছেলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৪৯ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮

স্কুলপড়ুয়া ১৬ বছরের এক ছেলে। রোজ স্কুলে যায়। আর বাড়িতে তার মা থাকেন একা। একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখে তার মায়ের সঙ্গে কেউ একজন ধ্বস্তাধস্তি করছে। এই দেখে সে ধর্ষকের ওপর আক্রমণ করে। কিন্তু ছোট কিশোরের আক্রমণ ঠেকিয়ে উল্টো তার মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় ধর্ষক।

ঘটনাটি ২০১৭ সালের। ধর্ষণের হাত থেকে মাকে বাঁচিয়ে সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল সেই কিশোর। ঘটনার পর তাকে ৯ মাস কোমায় থাকতে হয়। অবশেষে জ্ঞান ফিরে পায় কিছুদিন আগে। কিন্তু গত দুই মাস আগে তাকে ফ্লু আক্রমণ করে। দীর্ঘদিন রোগে ভুগে অবশেষে গত মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়েছে।

রাশিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সেভেরোদভিনস্কের ঘটনা এটি। একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দেখে তাদের এক প্রতিবেশী তার মা নাতালিয়া ক্রাপাভিনাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করছে। তার মায়ের পুরো শরীর রক্তাক্ত হয়ে গেছে।

রোমান প্রনিন নামের প্রতিবেশী জোর করে তার মায়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টা করছিল। তাই দেখে ভায়ানা নামের ছেলেটি তিন কেজি ওজনের একটি ডাম্বশেল দিয়ে ধর্ষককে আঘাত করে। কিন্তু ৩৭ বছর বয়সী রোমান তার আঘাত করা ডাম্বশেলটি ধরে ফেলে। এরপর ছেলের মাথায় ভারী ডাম্বশেলটি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। সে মনে করেছিল মা ও ছেলে দু’জনেই মারা গেছে।

Russia-2

প্রতিবেশীরা তাদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন। তারা এসে দেখতে পান মা ছেলে দুজনই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন। এরপর ভায়ানা প্রায় ৯ মাসের কোমায় চলে যায়। তাছাড়া তার মাকে মোট ২৭ বার অপারেশনের পর কোনোমতে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

মারাত্মক ভাবে আহত ও জীবন সংকটে থাকা কিশোরের মস্তিষ্কের কিছু অংশ বের করে ফেলেন চিকিৎসকরা। রাশিয়ার জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক আন্দ্রে মালকোভা টিটানিয়াম প্লেট কিনতে ও ছেলেটির চিকিৎসা খরচ যোগাড় করতে ক্যাম্পেইন শুরু করেন।

হামলার ঠিক এক বছর পর মারাত্মক অসুস্থ কিশোরের জ্ঞান ফেরে। সে বছরের জুনে সে তার নার্সকে চিনতে শুরু করে। তাছাড়া খুব অল্প পরিমাণে তরল খাবার খেতে সমর্থ হয় ছেলেটি।

এ ঘটনার একমাস পর তাকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। উন্নত চিকিৎসা দিতে তাকে স্পেন পাঠানোর জন্য পুনরায় তহবিল সংগ্রহ শুরু হয়। এরপর চলতি বছরের অক্টোবরে সে ফ্লুতে আক্রান্ত হয়।

 

Russia-3

অসুস্থ ছেলেকে মা মাত্র অল্প কয়েকবার দেখতে যাওয়ায় পুরো রাশিয়ার মানুষ তার সমালোচনা শুরু করেন। তবে তার মা বলেন, তিনি তার ছেলেকে দেখতে যেতে পারেন না। কারণ তার জন্যই যে ছেলের জীবন আজ সংকটাপন্ন।

প্রনিন নামের হামলাকারীর এর আগেও হত্যা মামলার জন্য ১৪ বছর জেল খেটেছেন। সে এখন জেল থেকে মুক্ত। এমনকি ওই আসামী তাদের বাড়ির খুব কাছাকাছি বসবাস করছে। তাকে আটকানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছে ছেলেটির মা। বর্তমানে এই মামলার তদন্ত চলছে।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।