ইন্দোনেশিয়ায় বিদ্রোহীদের গুলিতে ২৪ শ্রমিক নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাপুয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অন্তত ২৪ জন নির্মাণ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছে। ঘটনা তদন্তে গিয়ে ওই এলাকায় দেশটির সেনাবাহিনীর এক সদস্যও বিদ্রোহীদের গুলিতে মারা গেছেন। মঙ্গলবার ইন্দোনেশীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

সোমবার স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রোববার রাতে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে এবং নিউ গিনি দ্বীপের কাছে জেলার এনদুগায় ওই শ্রমিকদের গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা।

মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ বলছে, শ্রমিক হত্যার ঘটনার পর ওই এলাকায় সেনা এবং পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী পাঠানো হয়েছে। এসময় বিদ্রোহীদের হামলার মুখে পড়ে এই বাহিনীর সদস্যরা। এতে গুলিতে সেনাবাহিনীর এক সদস্য নিহত ও আরো একজন অাহত হয়েছেন।

নিহত নির্মাণ শ্রমিকরা দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ইসতাকা কারইয়ায় কর্মরত ছিলেন। তারা পাপুয়ার অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে ওই এলাকায় বেশ কিছু সেতু ও রাস্তা-ঘাট নির্মাণ কাজ করছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার শ্রম মন্ত্রণালয় বলছে, এ ঘটনার পর ওই এলাকায় সব ধরনের নির্মাণ কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলের পাশের শহর ওয়ামেনায় এক ডজনের বেশি কফিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাপুয়ার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মুহাম্মদ আইদি বলেছেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম বলছে, ৩১ জন নির্মাণ শ্রমিক মারা গেছেন, কিছু বলছে ২৪ জন। সেজন্য হতাহতের ব্যাপারে আমাদের যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন।

পাপুয়ার স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে সেখানে সহিংসতা চালিয়ে আসছে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। পাপুয়ায় প্রতিনিয়ত সহিংস ঘটনার দায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আসছে ইন্দোনেশিয়া। ১৯৬১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিল পাপুয়া। সেই সময় নেদারল্যান্ডসের উপনিবেশ ছিল এই দ্বীপ। কিন্তু স্বাধীনতা ঘোষণার মাত্র আট বছর পর ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে পরিণত হয় পাপুয়া।

তবে সর্বশেষ সহিংসতার পেছনে পাপুয়ার স্বাধীনতাকামীদের ছবি শ্রমিকদের ক্যামেরায় বন্দির জেরে ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। পাপুয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী 'ফ্রি পাপুয়া মুভমেন্ট' বিদ্রোহীদের ছবি শ্রমিকরা ক্যামেরায় তোলার কারণে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

পাপুয়ায় বিদেশি গণমাধ্যমের প্রবেশে ব্যাপক কড়াকড়ি রয়েছে। এছাড়া নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে থেকেও তথ্য পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর ওই হামলার দায় চাপানো হলেও ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার কমিশন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর প্রতি পাপুয়ায় সহিংসতার অবসানে সামরিক শক্তি প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে।

সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।