ইসলামিক সম্মেলনে শূকরের মাংস, নিন্দার ঝড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫৯ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে গত সপ্তাহে জাতীয় ইসলামিক সম্মেলনে শূকরের সসেজ পরিবেশন করার অভিযোগ উঠেছে। একে অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতাবিরোধী এবং অসম্মান প্রদর্শন হিসেবে মন্তব্য করেছেন অনেকে। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য এজন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

বার্লিনে জাতীয় ইসলামিক সম্মেলনের খাবারে ‘ব্লাড সসেজ’ দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। কেননা ইসলামে শূকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ। তবে কট্টরপন্থি দলগুলো এই খাবার দেয়াকে স্বাভাবিকভাবে দেখছে।

গত বুধবার সন্ধ্যার খাবার তালিকায় অন্যান্য খাবারের সাথে ছিল শূকরের রক্তের সসেজ, শূকরের মাংস এবং বেকন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য নিজেদের সিদ্ধান্তকে সঠিক উল্লেখ করে বলেছে, ওই সন্ধ্যায় বিভিন্ন দেশের ইসলামিক সংগঠনের নেতাদের পাশাপাশি জার্মান সরকারের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় কর্মকর্তারাও ছিলেন। তাদের কথা মাথায় রেখেই অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি এগুলো রাখা হয়েছিল।

আরও পড়ুন : মারা যাইনি, আমিই আসল বুহারি : নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট

মন্ত্রণালয় বলছে, সেদিন সন্ধ্যায় ‘বুফে’ ছিল; যেখানে বিশাল খাদ্যসম্ভারের মধ্যে ছিল শাক-সবজি, মাছ, মাংস এবং হালাল অন্যান্য মাংস। এরপরও যদি কিছু শূকরের মাংস থাকার কারণে কারো অনুভূতিতে আঘাত লাগে, সেজন্য তারা দুঃখিত।

pig-meat1

তবে অনেকেই মনে করছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার কট্টরপন্থি হওয়ায় তার সিদ্ধান্তেই ব্লাড সসেজ পরিবেশন করা হয়েছে। চলতি বছরের মার্চেই ‘জার্মানিতে ইসলামের ঠাঁই নেই’ বলে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি।

হ্যাশট্যাগ ব্লাড সসেজ গেট

তুর্কি-জার্মান সাংবাদিক টুনকে ওজদামার টুইটারে লিখেছেন, ‘যেসব মুসলমান শূকর খান না, তাদের প্রতি সামান্য সম্মান দেখালে সেটা অগ্রহণযোগ্য নয়। আমি নিজেও শূকরের মাংস খাই।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘জার্মানিতে বহু সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। তাই যেসব স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করছে, সেখানে শূকরের মাংস পরিবেশনে আমি খারাপ কিছু দেখি না।’

আরও পড়ুন : ওপেক থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে কাতার

তিনি বলেছেন, কিন্তু একটি ইসলামিক সম্মেলনে, যেখানে মুসলমানদের বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিতে ডেকে আনা হয়েছে, ধর্মীয় নানা কারণে নিত্যদিনকার সমস্যা সমাধানের জন্য যাদের কাছে আপনারা পরামর্শ চাইছেন, তাদের অনুভূতির প্রতি আপনাদের সম্মান দেখানো উচিত।

২০০৬ সালের ইসলামিক সম্মেলনেও শূকরের মাংস পরিবেশন করা হয়েছিল। দেশটির কট্টরপন্থি দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) জার্মান সংস্কৃতির উপর হামলার কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেছে। টুইটারে এএফডি'র আইন প্রণেতা আলিসে ভাইডেল লিখেছেন,‘ব্লাড সসেজ হলো জার্মানির সুস্বাদু খাবার। এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এটাকে মেনে নেয়াটাই সহিষ্ণুতার পরিচয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে আমরা এগুলো ত্যাগ করতে পারি না।’ ডিডব্লিউ।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।