বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন শুরু, দ্রুত প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের তাগিদ
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পোলান্ডে ২০০ দেশের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে জাতিসংঘ বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ২০১৮। সোমবার শুরু হওয়া এ সম্মেলনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আমরাই শেষ প্রজন্ম যারা সর্বনাশা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে ঠেকাতে পারি কিংবা আমরাই প্রথম প্রজন্ম যারা প্রথম জলবায়ু পরিবর্তনের প্রথম ভুক্তভোগী। তাই ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে গৃহীত পদক্ষেপগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
পোলান্ডে দুই সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে ২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার সীমিত করতে গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া দ্রুত গতিতে এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাওয়াকেও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈশ্বিক রাজনৈতিক পটভূমি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জলাবায়ু পরিবর্তনের কথা অস্বীকার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু চুক্তি থেকে চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে। এদিকে ব্রাজিলে সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করার ঘোষণা দেয়ায় জাতিসংঘের নেয়া প্রক্রিয়াকে আক্রমণ করেছেন ট্রাম্প।
কয়লা বান্ধব পোলিশ সরকারের জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজক দেশ হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন অনেক পর্যবেক্ষক। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন অভিপ্রায় হলো জলবায়ু নিরপেক্ষ হয়ে ওঠা। গত এক বছরের চরম আবহাওয়ার বিষয়ে আশঙ্কা করা হলেও নবায়নযোগ্য শক্তির সর্বনিম্ন মূল্য বেশ ইতিবাচক রয়েছে।
বিগত জলবায়ু সম্মেলনগুলোর সাবেক সভাপতিরা এক যৌথ বিবৃতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নেয়া পদক্ষেপগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘সময় যত পার হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ততই ভয়াবহভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠছে আমাদের সামনে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থার বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন।’
বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেন, ‘স্পষ্টতই আমরাই হলাম শেষ প্রজন্ম যারা জলবায়ু পরিবর্তনের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারি, তাছাড়া আমরাই প্রথম প্রজন্ম হিসেবে এর ভয়াবহ প্রভাবেরও শিকার।’
কারিতাস ইন্টারন্যাশনালের আদ্রিয়ানা অপরোমোলা বলেন, ‘প্রতিদিন গোটা বিশ্বের দরিদ্র ও মানবেতর জীবন যাপন করা ব্যক্তিরা জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছেন। এর রুপান্তর সম্ভব কিন্তু রাজনৈতিক সদিচ্ছাই পারে এই পরিবর্তনকে সম্ভব করতে।’
এসএ/জেআইএম