প্রধানমন্ত্রীর ভুয়া এপিএসের অফিস ও বিলবোর্ড ভাঙচুর


প্রকাশিত: ০১:১১ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৫

পাবনায় প্রধানমন্ত্রীর ভুয়া এপিএস পরিচয় দিয়ে প্রতারণাকারী জেলা সৈনিক লীগের কথিত সভাপতি শহিদুল ইসলাম নয়নের (৩২) ভাঙ্গুড়ায় রেল চত্ত্বরে তার ভিআইপি অফিস এবং বিল বোর্ড ভাঙচুর করেছে।স্থানীয় জনতা।

বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নয়ন পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার কালিবাড়ি মহল্লার মৃত গরীব উল্লা মন্ডলের ছেলে।

গ্রামবাসী জানায়, কয়েক বছর আগে তাকে সবাই ফটক্যা চোর বলে জানতো। কিছুদিন আগে সে নিজেকে সৈনিক লীগ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি করে সৈনিক লীগের একটি জেলা কমিটি ঢাকা থেকে অনুমোদন করে নিয়ে আসে। এরপর থেকে সে ঢাকায় অবস্থান করে সে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শেখর পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে প্রতারণা করে আসছিল। গত ১৬ আগস্ট ডিএমপি ও অপরাধ তথ্য বিভাগ তাকে শেরেবাংলা নগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর পুলিশ তার কাছ থেকে সাইফুজ্জামান শেখরের হারিয়ে যাওয়া একটি বাংলালিংক সিম উদ্ধার করে বলে জানা গেছে।  

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও ভুক্তভোগীরা জানান, নয়ন কাজ উদ্ধারের জন্য যে কোনো পদস্থ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে বলতো, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এপিএস শেখর বলছি।  ভাঙ্গুড়ায় এলেও এভাবে সে পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে বাড়ি যাতায়াত করতো।  তবে সে গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাত দিত না, শুধু গাড়িকে ফলো করার নির্দেশ দিত।  ফোনের বাইরে ব্যক্তি নয়ন নিজেকে পাবনায় বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি পরিচয় দিত।  ফোনে শেখর আর বাস্তবে সৈনিক লীগের সভাপতি-এই রহস্য তার গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত পুলিশও টের পায়নি।

এলাকাবাসী জানান. সম্প্রতি শহিদুল ইসলাম নয়ন ভাঙ্গুড়া মেন্দা আদর্শ গ্রামে বড়াল নদী দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করে।  মেয়র আব্দুর রহমান বাধা দিলে ওসি পুলিশ পাঠিয়ে তার বাড়ির কাজ অব্যাহত রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামছুল আলম জানান, সম্ভবত ওই নয়ন তাকে এবং সাব-রেজিস্ট্রারসহ উপজেলা পরিষদের কয়েকজন অফিসারকে কখনো প্রধানমন্ত্রীর এপিএস আবার কখনো নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এডিসি মেজর আরিফ পরিচয় দিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে অবৈধভাবে নানা রকম তদবির ও সুযোগ সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেছে।  

ওসি আবু জাফর জানান, শহিদুল ইসলাম নয়ন ওরফে ফটিক একজন ফুচক্যা চোর ও ফ্রট।  তাকে পুলিশ প্রটেকশন দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।  এদিকে নদীর জায়গা জবর দখল করে নয়ন যে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে তা ভেঙে ফেলার জন্য এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দাবি জানিয়েছে।

ভাঙ্গুড়ায় খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, অত্যন্ত হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান শহিদুল ইসলাম নয়নের এক নাম ফটিক।  ভাঙ্গুড়ায় তার মা ভূমিহীন হিসেবে আদর্শ গ্রামে সোয়া ২ কাঠা জমি বরাদ্দ পান এবং এর সঙ্গে বড়াল নদীর কিছু জায়গা দখল করে সেখানেই তারা কোনো মতে ঘর তুলে বসবাস করছিল।

সম্প্রতি ওই নদী দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করে।  কয়েক বছর আগে এলাকায় ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়া নয়ন গত বছর আবার এলাকায় এসে নিজেকে রাজনীতিবিদ বলে পরিচয় দিয়ে পাবনার বিভিন্ন স্থানে ভূমিমন্ত্রীর ছবির সাথে নিজের ছবি দিয়ে বিলবোর্ড লাগিয়ে নিজেকে ভূমিমন্ত্রীর একান্ত প্রিয়জন বলেও জাহির করে এবং চাকরি দেয়ার নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।  সে এলাকায় খাসী চোর হিসেবেও পরিচিত বলে জানান এলাকাবাসী।

একে জামান/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।