শেষ শয্যায় মৃত মা, সেলফি তুলে ফেসবুকে দিলো ছেলে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৪৯ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

সেলফি এখন আধুনিক জীবনের অন্যতম অনুসঙ্গ! কোথাও ঘুরতে গেছেন কিংবা আড্ডাবাজিতে মত্ত আছেন; সেলফি তুলে সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন অনেকেই। কিন্তু তাই বলে শোক ভুলে মৃত মায়ের সঙ্গে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করতে হবে? অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে ভারতে।

দেশটির সরকারও অনেক জায়গায় সেলফি পয়েন্ট তৈরি করে দিয়েছে। সেলফি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনার খবর হরহামেশাই পাওয়া যায়। এমনকি কোনো ঘটনা-দুর্ঘটনায় সেলফি তুলতে মগ্ন ছবিও দেখা যায়। তবে কেউ শ্মশানে শোয়ানো মৃত মায়ের সঙ্গে সেলফি তুলছেন এমন নজির বিরল বলাই যায়।

সেই ঘটনাই ঘটিয়েছেন কলকাতার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের বাসিন্দা গণেশ দাস। মৃত মায়ের সঙ্গে তোলা সেই সেলফি তিনি স্যোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করার পর সেই ছবি ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছবি ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

গণেশ দাস সোনার গয়না তৈরির কাজ করেন। কর্মসূত্রে তিনি থাকেন অন্য একটি রাজ্যে। বুধবার রাতে তিনি মায়ের মৃত্যু সংবাদ পান। গণেশের মা গীতাকে সাপে কামড়ায়। কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তড়িঘড়ি করে বাড়ি ফেরেন গণেশ। ততক্ষণে বাকি দুই ভাই এবং বোনেরা মায়ের দেহ নিয়ে পৌঁছে যায় শ্মশানে।

বাড়ি ফিরে সোজা শ্মশানে ছোটেন গণেশ। সেখানে তখনও গীতার দেহ দাহ করার জন্য বাঁশের খাটিয়াতে শায়িত। সেই দেহের সঙ্গেই সেলফি তোলেন গণেশ।

মায়ের দেহ দাহ হয়ে যাওয়ার পর তা পোস্টও করেন সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই তার এই পোস্ট দেখে সমালোচনা করেছেন। যদিও গণেশ সোশ্যাল মিডিয়াতেই সেই সব সমালোচনার উত্তর দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি মাকে খুব ভালবাসতেন। সেই ভালবাসার কারণেই তিনি মায়ের সঙ্গে ওই ছবি তুলেছেন স্মৃতি হিসাবে।

পশ্চিমবঙ্গের মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এটা একটা প্রদর্শনমুখীতা। একটা ভার্চুয়াল সমাজে প্রদর্শনের চেষ্টা। সেলফি মানেই সঙ্গে সঙ্গে সেই ছবি পোস্ট করতে হবে। সে উৎসব, বেদনা দুঃখ সব কিছুই। এখানে ওই ব্যক্তিকে দোষারোপ করে লাভ নেই। ব্যক্তির আচরণগত পরিবর্তনের সময় এসেছে। আনন্দবাজার।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।