ভিউয়ার তালিকায় শীর্ষে পর্ন সাইট


প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৫

উঠতি বয়সের প্রজন্ম বিপথগামী হওয়ার অন্যতম মাধ্যম অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট বা পর্ন সাইট। অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট র‌্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

ইন্টারনেটে এসব সাইটের কুফল সংক্রমক ব্যাধিতে রূপ নেয়ায় অন্যান্য দেশ তা প্রতিরোধে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও বাংলাদেশে তা নিয়ন্ত্রণের এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিকমিনিউকেশন রেগুলেটরি কমিশন)।

অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে টপ র‌্যঙ্কিংয়ের থাকা বেশ কয়েকটি পর্নগ্রাফিক সাইট বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। ক্রমান্বয়ে সবগুলো পর্ন সাইট নিষিদ্ধ করা হবে বলেও জানিয়েছে ভারত সরকার। তবে এ ঘোষণায় বেশ সমালোচনার মধ্যে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

জাগো নিউজের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মেধা বিকাশে সহায়ক অসংখ্য সাইটে ভিউয়ার কম হলেও অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট বা পর্ন সাইটের ভিউয়ারের পরিমাণ দেখে রীতিমতো আৎকে ওঠার মতো। গত এক মাসের অ্যালেক্সা পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি দিনই গড়ে প্রায় ২৫টি অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট প্রথম সারির র‌্যাঙ্কিং তালিকায় থাকে।

সর্বশেষ অনুসন্ধানে দেখা যায়, বুধবার বাংলাদেশে অ্যালেক্সা পরিসংখ্যানে ১০০ সাইটের মধ্যে প্রথম ২৭টি সাইটই ছিল পর্ন সাইট। এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাগো নিউজকে বলেন, ভারতের মতো দেশে পর্নগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এটি অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। বাংলদেশের বর্তমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের আওতায় বিটিআরসি চাইলে এসব পর্নগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করতে পারে।

জুনাইদ আহমেদ পলক আরো বলেন, আমরা ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’ তৈরির খসড়া অনুমোদন করেছি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞ মোস্তফা জাব্বারকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি এ আইনের বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয় নিয়ে কাজ করছেন।

এদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) অসহায়ত্ব ওঠে এসেছে। কমিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পর্নগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করা- বিটিআরসির জন্য কঠিন কাজ। এই সাইটগুলো এক নামে বন্ধ করলে ভিন্ন নামে ভাইরাসের মতো সক্রামিত হতে থাকবে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, বিটিআরসি তো ডিসিশন মেকার না। এসব সাইট সরকার চাইলে বন্ধ করতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকার এই সব সাইট বন্ধ না করলে বিটিআরসি এগুলো বন্ধ করতে পারবে না।

এদিকে পর্ন সাইটগুলোর ব্যাপক বিস্তার নিয়ে গভীর শঙ্কায় রয়েছেন দেশের অভিভাবক ও সমাজ বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের উঠতি প্রজন্ম ছেলে মেয়েরা ঘরের দরজা বন্ধ করে এসব দেখলেও কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। শুধু উঠতি বয়সীই নয় যদি কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিও যদি ঘরে বসে পর্ন সাইট দেখেন তাকে ঠেকানোর কোনো উপায় নেই।

তিনি আরো বলেন, এই পর্ন দেখার ফলে তাৎক্ষণিক দৃশ্যমান কোনো ক্ষতি মনে না হলেও জেনারেশন টু জেনারেশন এক ধরনের সামাজিক অবক্ষয় ঘটে। এর থেকে বাঁচার উপায় না পেয়ে ভারতের মতো দেশ পর্ন সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ভারতের এ সিদ্ধান্ত থেকে বাংলাদেশ শিক্ষা নিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম।

আরএম/এসকেডি/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।