সিআইএর হাতে যুবরাজের নতুন কল রেকর্ড : ‘খাশোগির কণ্ঠ থামিয়ে দাও’
যত শিগগিরই সম্ভব সাংবাদিক জামাল খাশোগির কণ্ঠ থামিয়ে দাও। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ও সৌদি প্রিন্সকে এভাবেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ বলছে, টেলিফোনে সৌদি যুবরাজ এ নির্দেশনা দেন তারই ভাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকে।
বৃহস্পতিবার তুরস্কের দৈনিক হুরিয়াত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত মাসে সিআইএর পরিচালক গীনা হ্যাস্পেল তুরস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন যে, সিআইএর কাছে একটি কল রেকর্ডিং রয়েছে। ওই টেলিফোন কলে সাংবাদিক জামাল খাশোগির কণ্ঠ থামিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেন সৌদি যুবরাজ।
হুরিয়াতের এই প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তুরস্কের সরকারি এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘এ ধরনের কল রেকর্ডিয়ের ব্যাপারে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। ছয় সপ্তাহ (গত ২ অক্টোবর) আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খুন হন সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট জামাল খাশোগি। তখন থেকেই সৌদি আরব বলে আসছে, এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আগাম কোনো তথ্য জানতেন না সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
আরও পড়ুন : কলকাতার প্রথম মুসলিম মেয়র হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম
হুরিয়াতের সাংবাদিক আব্দুল কাদির সেলভি একটি নিবন্ধ লিখেছেন। এতে তিনি বলেছেন, ‘অন্য একটি কথোপকথনের রেকর্ডিং রয়েছে। আর এই কথোপকথন হয়েছে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ ও তার ভাইর মধ্যে; যিনি ওয়াশিংটনে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।’
আব্দুল কাদির লিখেছেন, এটা বলা হচ্ছে যে,গত মাসে তুরস্ক সফরের সময় সিআইএর প্রধান গীনা হ্যাস্পেল এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা সৌদির ডি ফ্যাক্টো শাসকের সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ওই ফোন কলটি পর্যবেক্ষণ করেছে। ওই টেলিফোন কলে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যত দ্রুত সম্ভব জামাল খাশোগির কণ্ঠ থামিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন : ৬৫ দিন সূর্য উঠবে না আলাস্কার এক শহরে
গত ২ অক্টোবর তুরস্কে নিযুক্ত সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুন হন। ওইদিন বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র নেয়ার জন্য কনস্যুলেটে যাওয়ার পর আর বেরিয়ে আসেননি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান শুরু থেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, সৌদির শীর্ষ পর্যায় থেকে খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সৌদি আরব কোনো কিছুই জানে না বলে দাবি করে এলেও গত সপ্তাহে প্রথমবারের স্বীকারোক্তি দেয় দেশটি। সৌদি আরব বলছে, খাশোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কনস্যুলেটে প্রথম দিকে আলোচনা শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়নি।
কনস্যুলেটে কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাতাহাতির এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় তাকে। পরে তার দেহ টুকরো টুকরো করে তুরস্কে এক অ্যাজেন্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সূত্র : রয়টার্স।
এসআইএস/পিআর