ব্রেক্সিট চুক্তি অধরা থেকে যাবে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৫৪ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

ব্রেক্সিট সংক্রান্ত গণভোটের এত মাস পরেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ ও দুই পক্ষের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও বিভ্রান্তি কমার বদলে উল্টো বেড়ে চলেছে। ব্রিটেনের মন্ত্রিসভা ও সংসদের মধ্যে এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে কিছুতেই ঐকমত্য সম্ভব হচ্ছে না। আগামী বুধবারের মধ্যে ব্রিটেন ও ইইউ-র মধ্যে সমঝোতা না হলে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে।

মূল সমস্যা ব্রিটেনের উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশকে নিয়ে। ব্রেক্সিটের পর সেই প্রদেশের সঙ্গে আইরিশ প্রজাতন্ত্রের স্থল সীমান্তে কোনোরকম বাধা সৃষ্টি হলে প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি বিঘ্নিত হবার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। ইইউ কোনো অবস্থায় এমন পরিস্থিতি চায় না।

অন্যদিকে উত্তর আয়ারল্যান্ডকে ইইউ-র সাধারণ বাজারের মধ্যে রেখে সেই প্রদেশের সঙ্গে ব্রিটেনের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে সীমানা সৃষ্টি করার প্রস্তাবের ঘোর বিরোধী ব্রিটেন। আয়ারল্যান্ড ও ইইউ-র সীমান্তে ‘ব্যাকস্টপ’ বা সাময়িক বোঝাপড়া নিয়েও ব্রিটেনে অনেক মহলে সংশয় রয়েছে। তাদের আশঙ্কা, সেই বোঝাপড়া শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে যাবে এবং অন্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনাকে অত্যন্ত কঠিন বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, সদিচ্ছা থাকলেও যে কোনো মূল্যে ইইউ-র সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তি চান না তিনি। শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া সম্ভব হলেও তার পক্ষে মন্ত্রিসভা ও সংসদের সম্মতি আদায় করা অত্যন্ত কঠিন হবে, এ বিষয়ে কোনো মহলে সন্দেহ নেই। সেই অবস্থায় নতুন করে আরও অনিশ্চয়তা অনিবার্য – এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বুধবারের সময়সীমা দুই পক্ষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে বোঝাপড়া সম্ভব হলে চলতি মাসেই ব্রেক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ ইইউ শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করা হবে। সেখানে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। সেটা সম্ভব না হলে আগামী ১৩ই ডিসেম্বর ইইউ-র আগামী শীর্ষ সম্মেলন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ব্রেক্সিটের আগে চুক্তি অনুমোদনের প্রক্রিয়ার জন্য সময় অত্যন্ত কমে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে নিজের মন্ত্রিসভা, সরকারি জোট ও সংসদে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে নিজের দলের ইউরোপ-বিরোধী অংশ ও জোটসঙ্গী উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডিইউপি দল পদে পদে বাধা সৃষ্টি করে চলেছে। এই অবস্থায় তার পক্ষে দেশের হয়ে ইইউ-র সঙ্গে দরকষাকষি করা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।

সম্ভাব্য বোঝাপড়া ও তার পক্ষে অনুমোদন নিশ্চিত করতে না পারলে টেরেসা মে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নতুন নেতৃত্ব, নতুন করে গণভোট অথবা আগাম নির্বাচনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কিন্তু ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা ব্রেক্সিটের দিনক্ষণের উপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না।

সূত্র: ডি ডব্লিউ

এসএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।