৬ বছরেও প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের সাক্ষাত পায় না অটিজম শিশুরা


প্রকাশিত: ০১:৩৬ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৫

অটিজম শিশুর অভিভাবকদের (বাবা-মা) শতকরা ২৭ ভাগ মানসিক অবসাদে ভুগেন। এছাড়া অটিজম শিশুর উপসর্গ সনাক্ত হওয়ার পর থেকে প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের কাছে পৌঁছাতে অভিভাবকদের ৬ বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। একইসঙ্গে অটিজম শিশুকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত করতে পারিবারিক নিবিড় পরিচর্যা অত্যাবশ্যক হলেও শতকরা ৫৯ ভাগ অভিভাবকই মনে করেন ওষুধের চিকিৎসায় তার শিশু সুস্থ হয়ে উঠবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি) এর অর্থায়নে আন্তজার্তিক উদারাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান’ বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। রাজধানীতে বসবাসরত ৩৮৮ জন অটিজম শিশুর অভিভাবকদের (বাবা-মা) ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। অটিজম শিশুদের অভিভাবকদের শতকরা ৪৩ ভাগ ছিলেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী।
/সোমবার আইসিডিডিআর’বির সাসাকাওয়া অডিটরিয়ামে ‘রিসার্চ ফর অটিজম : অ্যাসেসমেন্ট অব মেন্টাল হেলথ স্ট্যাটাস এমং কেয়ারগিভারস অব চিলড্রেন উইথ অটিজম অ্যান্ড ফিজিবিল্যাটি অফ ক্রিয়েটিং এ কমিউনিটি বেইজড সাপোর্ট সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন আইসিডিডিআর’বির ইনটেরিম হেড ক্রনিক নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেজ ইউনিটের প্রধান ও মূল গবেষক ড. আলিয়া নাহিদ। এছাড়া চার সদস্যের গবেষণা দলে সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন- আইসিডিডিআর’বির ফাহমিদা তোফায়েল, জেনা হামাদানি ও জাতীয় মানসিক রোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে ৫ জন অটিজম শিশুর মধ্যে ৪ জন ছিল শিশু। শতকরা ৮৪ ভাগ বাবা-মা জানিয়েছে অটিজম শিশুকে সামলাতে তাদের নিদারুণ কষ্ট ও যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়। প্রতিমাসে একটি অটিজম শিশুর পিছনে ১৭ হাজার ৮শ’ ৯০ টাকা খরচ হয়। তন্মধ্যে এক তৃতীয়াংশ ব্যয় হয় বিশেষায়িত স্কুলের বেতন ভাতা বরাদ্দ বাবদ। শতকরা ৮৯ ভাগ বাবা মা জানিয়েছেন, বিশেষ স্কুলে গিয়ে শিশুদের উন্নতি হয়েছে।

সহ-গবেষক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, সাধারণ মানুষের মধ্যে শতকরা ৫ ভাগ বিভিন্ন কারণে মানসিক অবসাদে ভুগে থাকেন। কিন্তু অটিজম শিশুর অভিভাবকদের মানসিক অবসাদে আক্রান্তের হার ৫ গুণেরও বেশি।
/
তিনি বলেন, এ গবেষণা শহরের বিত্তবান ও উচ্চশিক্ষিত পরিবারের অটিজম শিশুর অভিভাবকদের ওপর পরিচালিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদে আক্রান্তের হার শতকরা হার ২৭ ভাগ হলেও গ্রাম অঞ্চলে দরিদ্র ও অশিক্ষিত পরিবারের অটিজম শিশুর বাবা- মায়েদের মধ্যে এ হার আশঙ্কাজনক হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীণ মোহাম্মদ নুরুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার (এএসডি) জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য প্যানেলের বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্রধানমন্ত্রী তনয়া সায়মা ওয়াজেদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- আইসিডিডিআর’বির নির্বাহী পরিচালক জন ডি ক্লিমেনস, স্বাস্থ্য অধিদফতরের এনসিডিসি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। প্যানেল আলোচক ছিলেন- অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার (এএসডি) জাতীয় পরামর্শক কমিটির সহ-সভাপতি ও বিএসএমএমইউ সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (এনসিডি অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ) ডা. মোস্তফা জামান, আনোয়ার হোসেন, সভাপতি এসডব্লিউএসি, এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মুন্নি সাহা প্রমুখ।

# বাবা-মা’ই অটিজম শিশুর প্রধান থেরাপিস্ট : পুতুল

এমইউ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।