মুসলিম বিদ্রোহীদের ‘আতঙ্কে’ থাই সেনারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩৬ এএম, ০৮ নভেম্বর ২০১৮

থাই সামরিক বাহিনী এবং সেদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মুসলিম বিদ্রোহীদের মধ্যে গত প্রায় দুই দশক ধরে সংঘাত চলছে। মাঝে কিছুদিন সহিংসতা কম হলেও এখন আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের সংঘাতপ্রবণ এলাকার এক চেকপয়েন্টের কাছে ছবি তুলছিলেন এক সাংবাদিক। তাকে থামাতে দ্রুত সেখানে হাজির হন এক নিরাপত্তারক্ষী। সাংবাদিকের পরিচয় জানার পর অবশ্য শান্ত হন নিরাপত্তারক্ষী। চেকপয়েন্টে ঝুলিয়ে রাখা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ছবির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বিদ্রোহীরা যে ক্রমাগত কতটা নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা আমার পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজার মৃত্যুর পর কিছুদিন সবকিছু শান্ত ছিল। কিন্তু এখন আবার সহিংসতা শুরু হয়েছে।’

আরেক চেকপোস্টে থাকা এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক আতঙ্কে থাকি। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, আমরা জানি না কখন এবং কোথায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পরবর্তী হামলা চালাবে। তারা বিশেষ কোনো পোশাক বা প্রতীক ব্যবহার না করায় সাধারণ মানুষ থেকে তাদের আলাদা করা এক দুরূহ ব্যাপার।’

মালয়েশিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে গত কয়েকমাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই বিচ্ছিন্নভাবে বোমা বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মূল লক্ষ্য সেনা এবং নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে অস্থিরতার দিকে নজর রাখা বেসরকারি উন্নয়নসংস্থা ‘ডিপ সাউথ ওয়াচ’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে।

পাটানি, ইয়ালা এবং নারাথওয়াত রাজ্যকেথাইল্যান্ডের ‘ডিপ সাউথ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বৌদ্ধপ্রধান দেশটির এই রাজ্যগুলোতে মুসলমানদের বসবাস বেশি। গত দুই দশক ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাবি হচ্ছে, এই রাজ্যগুলোকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিতে হবে। কিন্তু থাই সরকার সেই দাবি মেনে নেয়নি। বরং দেশটির সেনাবাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে নিয়মিত সহিংস ঘটনা ঘটতে শুরু করে। আর তখন থেকে এখন অবধি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং থাই সরকারের মধ্যে সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন সাত হাজারের মতো মানুষ। আহত হয়েছেন চৌদ্দ হাজারের মতো। মাঝখানে সহিংসতা কমলেও অস্থির পরিস্থিতির অবসানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং যে-কোনো সময় পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।