বন্ধুত্বের পথে আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৭ এএম, ০৭ নভেম্বর ২০১৮

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল অনেক সময় তার প্রতিবেশীদের জন্য নিজেকে একটি কঠিন প্রতিবেশী হিসেবেই ভাবতে ভালোবাসে। তবে সম্প্রতি আরবের কিছু অংশের সাথে দেশটির উষ্ণ বন্ধুত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী হঠাৎ করেই ওমানের সুলতানের সঙ্গে দেখা করেন।

এটি ছিলো মাত্র আট ঘণ্টার সফর এবং তাও দু দু’শকের বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো। সেখানে তিনি পেয়েছেন উষ্ণ আতিথেয়তা, এক কথায় অসাধারণ নৈশভোজ, ওমানের মিউজিক আর সাথে ছিলো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।

নেতানিয়াহু তার মন্ত্রীসভাকে জানিয়েছেন এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূত্র ধরেই সামনে কিছু সফরের সম্ভাবনা আছে। আবার প্রায় একই সময়ে ইসরায়েলের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রী মিরি রেগেভ ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে।

সেখানে এক ইসরায়েলি অ্যাথলেট স্বর্ণপদক পাওয়ার সময় ও ইসরায়েলের জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর সময় তাকে আবেগময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গেছে। এটাকেও আরব উপত্যকায় নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

পরে দুবাইতেই আরেকজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেছেন। সম্প্রতি দেশটির পরিবহন মন্ত্রী ওমানের রাজধানীতেই প্রস্তাব দিয়েছেন ইসরায়েলের সাথে আরব দেশগুলোর রেল যোগাযোগ স্থাপনের।

সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক ডোর গোল্ড বলছেন, এসব সফরগুলো সত্যিকার অর্থেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে মনে হচ্ছে আসলেই বরফ গলতে শুরু করেছে। তার মতে অনেক বছর ধরেই এ ধরণের কিছু বৈঠক হচ্ছে কিন্তু পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার মধ্যে এক ধরনের অবহেলা ছিলো। তবে এখন সেটা পরিবর্তন হচ্ছে। এর একটি কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে ইরান নিয়ে উদ্বেগের কথা।

কয়েকটি উপসাগরীয় দেশের মতো ইসরায়েলও ইরান নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা ইরানকে তাদের জন্য হুমকি মনে করে। সিরিয়া ও ইরাকের পরিস্থিতির সাথে ইরান ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তারা ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন করছে। লেবানন ও ফিলিস্তিনে হিজবুল্লাহকে পৃষ্ঠপোষকতা করে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনও ইসরায়েল ও আরব মিত্র দেশগুলোকে সমর্থনের মাধ্যমে ইরানকে চাপে রাখতে চাইছে।

ইসরায়েলের সাথে দ্বন্দ্ব নিরসনে ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরির মাধ্যমে যে উদ্যোগ নিয়েছেন ট্রাম্প তা নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক ফিলিস্তিন। তাদের ভয় ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও অন্যদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করবে এই চুক্তি মেনে নিতে।

এ মূহুর্তে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দানকারী আরব দেশ দুটি হচ্ছে মিসর ও জর্ডান। বিশ্লেষকরা বলছেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সংকটে পড়েছে সৌদি আরব। এর মধ্যেই নেতানিয়াহু কৌশলে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সমর্থনে কথা বলেছেন।

এই ঘটনাকে বীভৎস বললেও এ নিয়ে সৌদি আরবে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা ঠিক হবেনা বলে মনে করেন তিনি।
কারণ তার মতে, এর চেয়ে বড় সমস্যা হলো ইরান। বাহরাইন ইসরায়েলের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। আর এসব কিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে উপসাগরীয় অঞ্চলে আরব-ইসরায়েল উষ্ণতার সম্ভাবনাকে।

টিটিএন/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।