যশোরে শিশু হত্যাচেষ্টাকারীর মৃত্যুদণ্ড
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আজমেহেরপুর গ্রামে এক মাস ১৯ দিনের শিশু দুর্জয়কে অ্যাসিড খাইয়ে হত্যাচেষ্টার মামলায় চাচী রীনা রাণী তরফদারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকাও জরিমানাও করা হয়েছে।
রোববার যশোরের অতিরিক্ত দায়রা জজ ৪র্থ ও অ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার এ রায় ঘোষণা করেছেন।
আদালতের এপিপি আবু সেলিম রানা জানান, সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীর উপযুক্ত সাজা হয়েছে। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রীনা রাণী পলাতক রয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে দুর্জয়ের মা তাকে পোলিও টিকা খাওয়াতে নিয়ে যায়। দুপুরে বাড়ি ফিরে দুর্জয় কান্নাকাটি করায় রান্না করতে অসুবিধা হচ্ছিল। এ সময় দুর্জয়ের চাচী রীনা রাণী তাকে কোলে নিয়ে ঘরে যায়। এর কিছুক্ষণ পর দুর্জয় চিৎকার করে কান্না শুরু করলে তার মা ইতি রাণী ঘরে গিয়ে দেখেন দুর্জয়ের শরীরে পড়া সোয়ের্টার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে এবং ঠোট গাল ও গলা ঝলসে গেছে। মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে।
এ সময় রীনার কাছে দুর্জয়ের এ অবস্থার কারণ জানতে চাইলে তিনি কিছু না বলে শিশুটিকে কোলে দিয়ে চলে যায়। অসুস্থ অবস্থায় দুর্জয়কে বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানায় শিশুটি অ্যাসিডদ্বগ্ধ হয়েছে। পরে তাকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৯ দিন চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক), অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন পরিচালিত জীবন তার হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার হংকং নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দেশে ফিরে ২০০৭ সালের ৭ মে বাঘারপাড়া থানায় দুর্জয়ের মা ইতি রাণী তরফদার বাদী হয়ে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। এ মামলায় আসামি করা হয় রীনা রাণীকে। মামলার তদন্ত শেষে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২৩ জুলাই রীনা রাণীকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আফছার আলী দেওয়ান।
মিলন রহমান/এসআইএস/এমআরআই