যেভাবে বাঁচলেন বিধ্বস্ত লায়ন এয়ারের এই যাত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৫ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

জাকার্তার ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে প্রাণে বাঁচলেন ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের বিধ্বস্ত বিমানের এক যাত্রী। ইন্দোনেশীয় ওই নাগরিকের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে জাকার্তার যানজট। সোমবার জাভা সাগরে বিধ্বস্ত লায়ন এয়ারের বিমানের টিকিট কেটেছিলেন তিনি। কিন্তু যানজটের কারণে বিমানটির উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর জাকার্তা বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। আর এতেই বেঁচে যান তিনি; তবে বাঁচতে পারেনি বিমানের অপর ১৮৯ আরোহী।

ফ্লাইট ধরতে না পারা ইন্দোনেশীয় ওই ব্যক্তির নাম সনি সেতাওয়ান। ইন্দোনেশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা তিনি। প্রত্যেক সপ্তাহে লায়ন এয়ারের ফ্লাইট জেটি-৬১০ বিমানে করে মন্ত্রণালয়ের অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে জাকার্তা থেকে ব্যাংকা দ্বীপের প্যাঙ্কাল পিন্যাংয়ে যেতেন তিনি।

lion-air

সোমবার সনির অন্যান্য সহকর্মীরা বিমান উড্ডয়নের আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু জাকার্তার রাস্তায় কয়েক ঘণ্টার যানজটের কবলে পরায় ফ্লাইট ধরতে পারেননি সনি।

আরও পড়ুন : যেভাবে বিধ্বস্ত হলো ‘একেবারে নতুন’ বিমানটি (ভিডিও)

ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, আমি এবং বন্ধুরা সবসময়ই জেটি-৬১০ ফ্লাইটে যাতায়াত করতাম। আমি জানি না কেন সড়কে এত তীব্র যানজট ছিল। আমি সচরাচর ভোর ৩ টায় জাকার্তা বিমানবন্দরে পৌঁছাতাম। কিন্তু সোমবার আমি বিমাবন্দরে পৌঁছেছি সকাল ৬টা ২০ মিনিটে এবং ফ্লাইট ধরতে পারিনি।

lion-air

জাকার্তার এই অচলাবস্থা বাঁচিয়ে দিয়েছে সনির জীবন। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, এ ধরনের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় কারো বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ভাগ্যক্রমে সনি বেঁচে গেলেও তার অপর ছয় সহকর্মী; যারা বিমানের আরোহী ছিলেন তারা বাঁচতে পারেননি।

‘প্রথমবারের মতো আমার কান্না আমি নিজেই শুনছি। আমি জানি, বিমানের ওই ফ্লাইটে আমার বন্ধুরা ছিলেন।’ পশ্চিম জাভার বান্দুংয়ের বাসিন্দা সনি বলেন, তিনি দ্বিতীয় একটি ফ্লাইটে করে প্যাঙ্কাল পিন্যাং শহরে পৌঁছাতে সক্ষম হন। প্যাঙ্কালে নিরাপদে পৌঁছানোর পরই তিনি বিমান বিধ্বস্তের খবর জানতে পারেন।

আরও পড়ুন : ছিন্নভিন্ন মরদেহের ডিএনএ টেস্ট শুরু

এই খবর পাওয়ার পর তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন; যা ছিল আবেগপূর্ণ। ‘আমার পরিবার বিস্মিত হয়ে যায় এবং মা কান্নাকাটি করেন। তবে আমি বলেছিলাম, আমি নিরাপদ আছি। আমি কৃতজ্ঞ।’

lion-air

জাকার্তা বিমানবন্দর থেকে ১৮৯ আরোহী নিয়ে উড্ডয়নের মাত্র ১৩ মিনিট পর স্থানীয় সময় সোমবার ৬টা ৩৩ মিনিটে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে লায়ন এয়ারের ফ্লাইট জেটি-৬১০ জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয়। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, বিমানের ওই ফ্লাইটে মন্ত্রণালয়ের অন্তত ২০ কর্মকর্তা ছিলেন।

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় তদন্ত ও উদ্ধার সংস্থা বলছে, দুর্ঘটনায় বিমানের সব আরোহী এবং ক্রু মারা গেছেন এবং তারা সাগর থেকে বেশ কিছু মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার করেছেন।

সূত্র : এএফপি।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।