তিন স্ত্রীসহ নিজের জন্য মৃত্যুর পরের বাড়ি বানাচ্ছেন তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৩ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

সুন্দর একটা বাড়ির স্বপ্ন প্রতিটি মানুষই দেখে। বেঁচে থাকতে মনের মতো সাজানো বাড়িতে কাটিয়ে দেয়ার ইচ্ছা সব মানুষেরই। তবে পুরুষ লোকের বাড়ির পাশাপাশি পছন্দের ব্র্যান্ডের দামি গাড়িরও শখ থাকে। আর এসব স্বপ্ন পূরণের জন্যই যতসব চাকরি-বাকরি।

তবে মৃত্যুর পরে আপনার কবর কোথায় হবে- সেটি কি কখনও ভেবেছেন? এটা নিয়ে কি আপনি মাথা ঘামান? বোধহয় না! তবে আপনি না ভাবলেও তানজানিয়ার নজোম্বের বাসিন্দা অ্যান্টন মান্দুলানি সেটা চিন্তা করে কিন্তু নিজের এবং তার তিনজন স্ত্রীর জন্য ইতোমধ্যে সমাধি তৈরি করে রেখেছেন।

বাইরে দেখে নির্মাণ কাজের ধরন দেখে মনে হবে যেন কোনো বাড়ি বানানো হচ্ছে। তবে ভেতরের চিত্র যে কাউকে চমকে দেবে। সেখানে রয়েছে ১২ মিটার গভীর একটি সমাধি, যা হবে অ্যান্টন মান্দুলামি এবং তার তিন স্ত্রীর মৃত্যুর পরের ঠিকানা। আটবছর ধরে এই সমাধির কাজ চলছে, যা অ্যান্টনির সারাজীবনের স্বপ্ন।

Home

অ্যান্টন মান্দুলামি বলছেন, আমি এই সমাধি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ আমি চাই না মানুষ আমাকে ভুলে যাক। সবমিলিয়ে এখানে এক হেক্টর জায়গা আছে, যেখানে আমি এবং আমার তিন স্ত্রীর সমাধি হবে। এটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এখান থেকে জানতে পারবে- আমি এই পরিবারের জন্য কী ছিলাম।

তার ইচ্ছা অনুযায়ী, মৃত্যুর পরে মান্দুলামি এবং তার স্ত্রীদের এই স্থানে কবর দেয়া হবে। বিবিসির সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয় মান্দুলামি বড় স্ত্রী ডামিয়ানা উইকেচর। তিনি বলেন, ‘আমার মতে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, তিনি চমৎকার একটি কাজ করেছেন। মৃত্যুর পরে নিজের থাকার জায়গাটি তিনি নিজেই তৈরি করে নিচ্ছেন। তার একজন স্ত্রী হিসেবে এটা আমার জন্য ঠিক আছে। আমি খুশি, কারণ আমাদের একস্থানে সমাধি হবে।’

মান্দুলামি জানান, এই প্রকল্পের পেছনে তিনি পাঁচ হাজার ডলার খরচ করেছেন, যা শেষ হতে আরও চার বছর সময় লাগবে। কিন্তু দরিদ্র একটি গ্রামে এভাবে হাজার ডলার খরচ করে সমাধিস্থান তৈরি করার বিষয়টি সবারই নজরে পড়েছে। এ নিয়ে গ্রামের প্রতিবেশী বাসিন্দাদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

Home

গ্রামের বাসিন্দা জোনাস মেহেমা বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা ঠিকই আছে। কারণ যখন থেকে তিনি প্রথাগত হার্বালের ব্যবসা শুরু করেন, তখন থেকেই তিনি বলেছেন যে, তিনি ইতিহাস তৈরি করতে চান, যাতে মৃত্যুর পরেও মানুষ তাকে ভুলে না যায়।’

গ্রামটির আরেকজন বাসিন্দা ভিক্টর নায়াগাওয়ার অভিমত অবশ্য ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘এটা এমন একটা কাজ যা আমাকে খুবই উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আমি কখনও দেখিনি কেউ এত অর্থ খরচ করে নিজের সমাধি কেন্দ্র তৈরি করছে। আমার মতে, নেতাদের ক্ষেত্রে এটা গ্রহণীয় হতে পারে, যেমন আমাদের জাতির পিতার জন্য, কিন্তু আমি খুবই অবাক হয়েছি যে, স্থানীয় একজন বাসিন্দা এরকম বিশাল কবরস্থান তৈরি করছে।’

এই সমাধি কেন্দ্রই একমাত্র বিষয় নয়, যা তানজানিয়ার মানুষের মধ্যে আলোচনা তৈরি করেছে। মান্দুলামির অপর ইচ্ছা মৃত্যুর পরে তার দেহ মমি করা হবে এবং প্রকাশ্যে সেটি প্রদর্শন করা হবে, যা নিয়ে তৈরি করেছে বিতর্ক।

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।