তসলিমা নাসরিনের মেয়েও আছে কলকাতায়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩১ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। যার মধ্যে অন্যতম ধর্মীয় বিষয়ে ‘বিরূপ মন্তব্যে’ নির্বাসিতও হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। সেখানেও তাকে ঘিরে বিতর্কের শেষ হচ্ছে না। সম্প্রতি অঙ্কিতা ভট্টাচার্য নামের একটি মেয়ে নিজেকে ভারতের বিজেপির এমপি জর্জ বেকার ও তসলিমা নাসরিনের মেয়ে বলে দাবি করেছেন।

বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন জীবনে তিনবার বিয়ে করেছেন। বিয়ের বাইরেও যে তার বিভিন্ন জনের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল -তা নিজেই লেখার মাধ্যমে খোলাখুলি জানিয়েছেন তিনি। তবে জর্জ বেকার ও তার যে সন্তান রয়েছে তা রিতিমতো বোমা ফাটানোর মতো সংবাদ।

ভারতের অনলাইন নিউজ পোর্টাল কলকাতা২৪x৭-এর এক প্রতিবেদনে প্রথম বিষয়টি উঠে আসে। ‘বিজেপি সাংসদ-তসলিমা ‘অবৈধ’ সম্পর্ক ফাঁস করল মেয়ে’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, অঙ্কিতা ভট্টাচার্য নামের ওই মেয়েটি এমনটাই দাবি করেছেন। তিনি ভাষায়, ‘আমি অঙ্কিতা ভট্টাচার্য। আমার স্বামীর নাম ইন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। আমার বাবার নাম জর্জ বেকার। মায়ের নাম তসলিমা নাসরিন।’

সংবাদটিতে বলা হয়, জর্জ বেকারের সঙ্গে তসলিমা নাসরিনের সম্পর্ক ছিল এবং বর্ধমানের ভাতার থানা এলাকার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা অঙ্কিতা ভট্টাচার্য তাদের সন্তান। অঙ্কিতার ছোটবেলা কেটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেহালায়। আর তাকে লালন-পালন করেছেন গৌরী ভট্টাচার্য নামের এক নারী। যিনি আবার জর্জ বেকারের স্ত্রী অর্পিতার বোন।

জন্মের পর বেশ কয়েক বছর বাবা জর্জ বেকার ও মা তসলিমা নাসরিনের সঙ্গেই কাটিয়েছিলেন অঙ্কিতা। সেই সময়ের বেশ কিছু ছবিও গৌরীদেবী তাকে দিয়েছে। গৌরীদেবী মারা গেছেন। তবে তার জীবদ্দশায় ভাতারের বাসিন্দা ইন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিয়ে দেন অঙ্কিতার।

অঙ্কিতা ভট্টাচার্য আরও জানিয়েছেন, নিজের প্রকৃত বাবা-মায়ের বিষয়ে জানার পর জর্জ বেকারের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। সে সময় ‘জর্জ বেকারের কাছে আমি পিতৃস্নেহ পেয়েছি’ বলেও জানান।

এদিকে কলকাতা২৪x৭-এ এমন সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বেশ চটেছেন তসলিমা নাসরিন। সংবাদটি পুরোপুরি ভুয়া উল্লেখ করে সংবাদ মাধ্যমটি নিয়েও বেশ সমালোচনা করেছেন তিনি। তবে সংবাদের লিঙ্ক শেয়ার করে তার ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাস সড়িয়ে নেয়ায় বিতর্কের নতুন খোরাক পেয়েছেন সমালোচকরা। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমটিও পাল্টা সংবাদ প্রকাশ করেছে।

প্রথম স্ট্যাটাসে তসলিমা নাসরিন লিখেন, ‘এতদিন কলকাতা২৪x৭-কে ভালো একটি নিউজ পোর্টাল বলে জানতাম। এখন তো দেখি পুরোপুরি ভুয়া নিউজ পরিবেশন করতেছে। জর্জ বেকার কে তাই তো জানি না, তার সাথে ছিল নাকি অবৈধ সন্তান আমার, কোথাকার কোন ছেড়ি নাকি দাবি করেছে সে আমার ছেড়ি। কই যাই! পাইছো বটে আমারে! অবৈধ সম্পর্ক, সেক্স -এসবের গন্ধ পাইলেও মাইনষের আমার কথা মনে পড়ে। এখন তো এক কাঠি আগাইয়া ছেড়ি মেড়ি দেখলেই তাদেরে আমার ছেড়ি বইলা মনে করতাছে জনগণ।’

taslima

তবে এ স্ট্যাটাস সরিয়ে নিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। সম্পূর্ণ স্ট্যাটাস সরিয়ে নিয়ে সংবাদের লিঙ্কের সাথে তিনি শুধু লিখেন, ‘হায় হায়, এইসব কী শুনি!’ বিষয়টি নিয়ে ‘জর্জের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ ওড়ালেন? নাকি মানলেন তসলিমা?’ শিরোনামে আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউজ পোর্টালটি।

এছাড়া তিনি আরও একটি স্ট্যাটাসে অঙ্কিতা ভট্টাচার্য যে তার মেয়ে নন সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তসলিমা নাসরিন লিখেন, ‘অঙ্কিতা ভট্টাচার্য গ্যাং একটা আজগুবি খবর দিয়েছে kolkata24x7 কে। তারাও খবর লুফে নিয়েছে প্লাস ওদের সাক্ষাতকারও নিয়েছে। সাক্ষাতকারের ভিডিও-ও খবরের সংগে জুড়ে দিয়েছে। সংবাদ মাধ্যমটি থেকে কিন্তু কেউই আমার কাছে তথ্যের সত্যতা জানতে চায়নি। মেয়েটা আর সঙ্গের দুটো পুরুষলোক কী উদ্দেশে এমন সব মিথ্যে কথা বলছে, তা সাংবাদিকদের উচিত, বের করা। কোনও পাগল এসে যা তা বল্লো, সাংবাদিকদের কি তা প্রচার করা উচিত যাচাই না করে?’

‘অঙ্কিতার পুরোনো ছবি বলে যেটা চালিয়েছে, সেটা সল্টলেকে রেখাচিত্রমের শিল্পী রেখা চক্রবর্তী, আর তার ছেলে অরুণ চক্রবর্তীর মেয়ের সঙ্গে তোলা। ছবিটা নিশ্চয়ই আমার ফেসবুকের এলবাম থেকে পেয়েছে।’

‘ভিডিওটা দেখলাম। তিনটে লোক kolkata24x7 কে কী সহজে উল্লু বানিয়ে গেল। নিজেদের আবার দাবি করছে হিউম্যান রাইটস অরগানাইজেশনের লোক বলে। ভয়ঙ্কর কাণ্ড। সাংবাদিকরা ফ্রড চিনতে পারে না? নাকি মজার খবর হলেই হলো? এতে কারও সম্মান হানি হলে হোক?’

তবে এতো কিছুর পর বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না তসলিমা নাসরিনের। একের পর এক সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত এই লেখিকা।

আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।