হুমকির মুখে ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা’
শুঁয়াপোকার মাথা ভেদ করে বেড়ে ওঠা ফাঙ্গাস বা ছত্রাকের দাম কত হতে পারে? চীনের বেইজিংয়ে এর সর্বোচ্চ মূল্য মাঝে মধ্যে স্বর্ণের দামের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেড়ে যায়। কারণ, এটি ক্যানসার থেকে শুরু করে নপুংসকতা -প্রায় সব অসুখের মহৌষধ বলে বিশ্বাস অনেকের।
এ ছত্রাক ‘ইয়ারসাগুমবা’ নামে পরিচিত। যা চা বানাতে পানি ফোটানোর সময় মেশানো হয়। অনেকে আবার স্যুপের সঙ্গেও এটি মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। কারণ, ইয়ারসাগুমবা ক্যানসার থেকে শুরু করে নপুংসকতা -প্রায় সব অসুখের মহৌষধ বলে বিশ্বাস অনেকের। ফলে চীন, নেপাল, ভুটানে এটি ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা’ বলে পরিচিত। যদিও এর গুণের তথ্য বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়।
মার্কিন জার্নাল ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ বা পিএনএএস-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে ইয়ারসাগুমবাকে বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান বায়োলজিক্যাল পণ্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইয়ারসাগুমবার দাম অনেক বেড়েছে। বেইজিংয়ে এর দাম কখনো স্বর্ণের দামের চেয়ে তিনগুন বেশিও হয়।
হিমালয়ের ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার মিটার উঁচুতে ইয়ারসাগুমবা জন্মায়। এ ফাঙ্গাস প্রথমে শুঁয়াপোকার শরীরের ভেতরে ঢুকে ধীরে ধীরে তাকে মেরে ফেলে। এরপর মৃত শুঁয়াপোকার মাথা থেকে ইয়ারসাগুমবা মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে।
ইয়ারসাগুমবার জন্য বিশেষ পরিবেশের প্রয়োজন হয়। তাপমাত্রা হতে হবে হিমাংকের নীচে, তবে মাটির উপর সবসময় বরফ জমে থাকলে চলবে না। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন পরিবেশ হারিয়ে যাওয়ায় ইয়ারসাগুমবার উৎপাদনও কমে যাচ্ছে বলে পিএনএএস-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়।
১৯৭৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে হিমালয় রেঞ্জ এলাকায় বিশেষ করে ভুটানে শীতকাল একটু উষ্ণ হয়ে ওঠায় ইয়ারসাগুমবার উৎপাদন কমে গেছে। এই সময়ে ভুটানে তাপমাত্রা প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। সূত্র : ডয়চে ভেলে
আরএস/পিআর