দাবানল প্রতিরোধে ‘ছাগ বাহিনী’ নিয়োগ দিল পর্তুগাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৮

কোথাও আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুন নেভাতে এই বাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এজন্য প্রতিটি দেশই অগ্নিকাণ্ডজনিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দমকল বাহিনীর নিয়োগ দিয়ে থাকে। তবে এবার ব্যতিক্রম কিছু করে দেখাল পর্তুগাল। শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে, দাবানল নেভানোর কাজে ৩৭০টি ছাগলের একটি ব্রিগেড ব্যবহার করছে দেশটি।

ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, প্রত্যেকবার দাবানলে ধ্বংস হয়ে যায় পর্তুগালের অসংখ্য বনভূমি। মারা যায় অসংখ্য বন্যপশু ও পাখি। আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় অসংখ্য খামার বাড়ি ও শস্য মজুদ করার ছোট ছোট গুদাম। তবে এবার গ্রীষ্মকালের অনেক আগেই সতর্কতা অবলম্বন করেছে পর্তুগাল প্রশাসন। তবে এ সতর্কতা হিসেবে কোনো দমকল বাহিনী নিয়োগ করে বন, জঙ্গলে পানি ছেটানোর ব্যবস্থা করেনি সরকার। করেনি গাছ কাটার ব্যবস্থাও। এমনকি কোনো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যেও দাবানল নেভানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। এসব বাদে ছাগলদের একটা বড় ব্রিগেডকে দাবানল প্রতিরোধের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে পর্তুগাল সরকার। ৩৭০টি ছাগ সেনার একটি ব্রিগেডকে দাবানল নেভানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পর্তুগালের পার্বত্য অঞ্চলের কোলে বেড়ে ওঠা জঙ্গল ও বনভূমিগুলোতে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও বলছে, দেশের প্রায় ১০০ পশুপালকের কাছ থেকে এই ছাগলগুলোকে ভাড়া করেছে প্রশাসন। দেশের বিভিন্ন পার্বত্য অঞ্চলের বনভূমিতে এদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। মনের সুখে বনের ঘাস-পাতা খেয়ে সাফ করে দিচ্ছে ছাগলের দল। বড় গাছ না খেতে পারলেও, চারাগাছ থেকে শুরু করে লতাপাতা সবই চলে যাচ্ছে এই ছাগ সেনার পেটে।

প্রশাসনের দাবি, দাবানলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো আগুন ছড়িয়ে পড়া। একটা বনে আগুন ধরলে মুহূর্তের মধ্যে তা আশপাশের বনগুলোতে ছড়িয়ে যায়। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে শুকনো পাতা ও ছোট ঘাস। এই ছাগ বাহিনী নিয়োগের ফলে সেই আগুন ছড়ানোকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

পর্তুগালে প্রত্যেক বছর এই দাবানলের ফলে কেবল প্রাকৃতিক সম্পদই নষ্ট হয় না; পাশাপাশি প্রাণ যায় প্রচুর মানুষের। গত বছরই প্রায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে এই ভয়ঙ্কর দাবানলে।

পর্তুগাল প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এই দাবানলের ফলে দেশের পর্যটন ব্যবস্থায় প্রভাব পড়ছে। অনেক পর্যটক এই স্থানগুলোতে যেতে চাইছেন না। এই বিপদ দূর করতেই এমন অভিনব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলাফল পেতেও যে সরকারকে অপেক্ষা করতে হবে তা-ও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

এসআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।