খাশোগি ইস্যুতে ত্রিমুখী চাপে সৌদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

খাশোগি ইস্যুতে উদ্বেগ জানানোর পর এবার বাদশাহ সালমানের সঙ্গে বৈঠক করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে সৌদি পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন। এ ছাড়াও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সৌদির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলছেন, খাশোগি হত্যার যথাযথ তদন্ত করবে তারা।

তুরস্কে থাকা সৌদি কনস্যুলেট থেকে জামাল খোশেগির নিখোঁজ হওয়ার পর সবার সন্দেহের তির সৌদি আরবের দিকেই। তুরস্ক বলছে, খাশোগিকে কনস্যলুটের ভেতরেই হত্যা করার যথেষ্ট প্রমাণ তাদের হাতে আছে। গত ২ অক্টোবর তুরস্কে অবস্থিত সৌদি কনসল্যুটে ঢোকার পর থেকেই নিখোঁজ হন সৌদি সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খোশেগি। মাইক পম্পেও তার সফরে তুরস্কের সেই সৌদি কনস্যুলেট পরিদর্শনে যাবেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

কনসল্যুটের ভেতরে খাশোগিকে হত্যার অভিযোগ জোড়ালোভাবে প্রত্যাখান করে আসছে সৌদি সরকার। যদিও আন্তর্জাতিক কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, খাশোগিকে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। স্বীকারোক্তিমূলক ওই প্রতিবেদনে সৌদি আরব বলছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মৃত্যু হয়েছে খাশোগির।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, খাসোগির সঙ্গে কী ঘটেছে, তা একবার স্পষ্ট হলে বিশ্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কীভাবে যথাযথ উপায়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে।

এদিকে খাসোগি নিখোঁজ ইস্যুতে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন বর্জন করার কথা ভাবছে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে ওই সম্মেলন থেকে কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ী ও মিডিয়া গ্রুপ তাদের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খাশোগির নিখোঁজের নেপথ্যে একদল দুর্বত্ত হত্যাকারীর কথা বলেন। তবে তার এ মন্তব্যের পেছনে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেন নি তিনি। এ ঘটনায় সৌদি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে ট্রাম্পের এক টেলিফোন আলাপ হয়। ওই ফোনালাপে খাশোগির নিখোঁজের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন সালমান।

সৌদি রাজপুত্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা ট্রাম্প এর আগে বলেছেন, খাসোগির মৃত্যুর জন্য সৌদি আরব দোষী প্রমাণিত হলে যুক্তরাষ্ট্র কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা নেবে। তিনি জানান, এমন কিছু হলে তিনি খুবই মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ হবেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করছে, সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচনাকারীরা দেশের বাইরেও নিরাপদ নন।

এর আগে তুর্কি পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে তদন্ত করতে যান। যেখান থেকেই নিখোঁজ হন রাজ পরিবারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সৌদি সাংবাদিক জামাল খোশেগি।

এদিকে গত শুক্রবার পরিবারের বরাত দিয়ে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ বলে, সৌদি কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাসোগিকে হত্যার অডিও এবং ভিডিও প্রমাণ তারা পেয়েছে। তবে খাসোগির নিখোঁজের ঘটনায় নিজেদের কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও বহির্বিশ্বের জোরালো অবস্থানের কারণে বেশ চাপে রয়েছে কঠিন রক্ষণশীল সৌদি আরব।

উল্লেখ্য, ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার জন্য গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ঢোকেন সাংবাদিক জামাল খাসোগি। কিন্তু তিনি সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসেননি। সৌদি রাজতন্ত্রের বিরোধিতাকারী খাশোগি ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন। বিবাহ বিচ্ছেদের দলিল সংক্রান্ত কাজে তিনি তার হবু বউকে কনস্যুলেটের বাইরে রেখে ভেতরে প্রবেশ করেন।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।