ইরানের সরকার পরিবর্তন করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র : হাসান রুহানি
ইরানে ক্ষমতাসীন শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রোববার দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এ মন্তব্য করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন সবচেয়ে খারাপ। ইরান গত চার দশকের মধ্যে কখনোই এ ধরনের প্রতিকূল প্রশাসনের মুখোমুখি হয়নি।
চলতি বছরের মে মাসে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন থেকেই এ দুই দেশের মধ্যে উত্তজনা বিরাজ করছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে রুহানি বলেন, ‘গত চল্লিশ বছরের মধ্যে ইরান, ইরানি জনগণ ও ইসলামি শাসনব্যবস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের মতো হিংসুটে কোনো দলকে দেখা যায়নি।’
আরও পড়ুন : পেট্রোল লুট করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ৫০ চোর
‘একটা সময় ছিল যখন শুধুমাত্র একজন মানুষের শত্রুতা ছিল। বাকিরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করতেন। বর্তমানে...সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তিরা পরস্পরের পাশে ঘিরে রয়েছে।’ তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বছরের উদ্বোধনী এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে মার্কিনিরা মানসিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন ইরানের এই প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, ইরানি শাসনব্যবস্থার বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য। তাদের মুখের বুলিতে ইরানি শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন অাসবে বলে মার্কিনিরা দাবি করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কি তারা পরিবর্তন আনতে পেরেছেন। শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন অানার জন্য আইনি পরিবর্তন দরকার, অন্যথায় হবে না।
আরও পড়ুন : ঘরে ঘরে মদ সরবরাহ করবে রাজ্য সরকার
ইরানের বাণিজ্যিক মুদ্রা, কারখানার বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য ও অটো খাতের বেশ কিছু পণ্যের বিরুদ্ধে গত আগস্টে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আগামী মাস থেকে ইরানের তেল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।
এ ঘটনায় ইরান অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে বলে দেশটির অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কিছু ইরানি বলছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইরানে ভয়াবহ সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। এবারের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হলে কয়েক বছর আগের সেই সঙ্কটের চেয়ে এবারের সঙ্কট মারাত্মক অাকার ধারণ করতে পারে।
আসন্ন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবেলায় ইরান ইতোমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা নেয়ার কথা জানিয়েছে। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এশাক জাহাঙ্গীরি বলেছেন, কিছু দেশ ইরানি তেল ক্রয় বন্ধ করে দিলেও তেহরান নতুন ক্রেতা খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে।
ইরানের তেল রফতানি একেবারে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে ব্যর্থ হবে ইরান। দেশটির সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম আইআরআইবি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমেরিকা মনে করে ইরানের তেল রফতানির শূন্যতা সৌদি আরবকে দিয়ে পূরণ করা যাবে। কিন্তু সেটি সম্ভব নয়।
সূত্র : রয়টার্স, তাসনিম নিউজ অ্যাজেন্সি।
এসআইএস/পিআর