দুমুখো বিরল সাপ নিয়ে চলছে গবেষণা
সাপ নিয়ে সবসময় অদ্ভুত এক ভয় কাজ করে মানুষের মধ্যে। যদি সেটি হয় দু’মুখো, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। স্বাভাবিকভাবেই দ্বিগুণ হয়ে যাবে সেই ভয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার উডব্রিজে উদ্ধার হয়েছে দুই মাথাওয়ালা তাম্রবর্ণের একটি সাপ। সাপটির ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন এক বন্যপ্রাণি বিশেষজ্ঞ। বেশ ভাইরাল হয়েছে বিচিত্র ও দুর্লভ সাপটির ছবি।
বন্যপ্রাণি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই মাথাওয়ালা সাপ খুব কমই দেখা যায় পৃথিবীতে। সরীসৃপ-সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ক্লেওপফার জানান, এই সাপটি ‘অত্যন্ত বিরল’। তিন দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেও এমন জিনিস আগে তিনি দেখেননি।
তিনি আরও জানান, দুই মাথাওয়ালা এই সাপ আসলে মানুষের যমজ বাচ্চার মতো। যখন ভ্রূণ দুই যমজে ভাগ হতে শুরু করেও থেমে যায় তখন এমনটা হয়। বিশেষজ্ঞদের অনুমান ৬- ৮-ইঞ্চি লম্বা সাপটির বয়স প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে উডব্রিজের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন এক মহিলা। এ সময় নিজের বাগানে সাপটি তিনি দেখতে পান। ভীষণ ভয়ও পান তিনি। কারণ বাড়ির পোষ্য ও বাচ্চাদের ক্ষতি করতে পারে, এই ভেবে। ছবি তুলে একটি ইমেল গ্রুপে তিনি শেয়ার করেন। সেখান থেকে পরে জানা যায়, সাপটি কতখানি বিরল।
ওই বাড়ির মালিক জানান, সাপটি চেনার পর অন্তত ছয়জন, যার মধ্যে একজন ব্যক্তিগত এক জাদুঘরের মালিক, তারা সাপটি পর্যাপ্ত মূল্যে কিনতে চান। ওই রাজ্যের বিখ্যাত সর্পবিজ্ঞানী ক্লেওপফার জানান, দু’মুখো সাপটিকে পাওয়া তার কর্মজীবনের একটি বিশাল মাইলস্টোন।
এই প্রথম ভার্জিনিয়া থেকে দু’মুখো সাপ পাওয়া গেছে তা নয়, ১৯৯০ সালে শার্লোটেসভিলে এমনই একটি সাপ পাওয়া যায় কিন্তু সেটিকে মেরে ফেলা হয়।
নিজ ফেসবুক পেজে ক্লেওপফার জানান, বিরল ওই সরীসৃপ প্রাণিটির বাম মাথায় বেশ শক্তিশালী অন্ননালী রয়েছে। ডানদিকের মাথার সঙ্গে রয়েছে ভালো গলা যা খাবার খাওয়ার পক্ষে বেশ উপযুক্ত। সাপটির একটি হৃৎপিণ্ড ও একজোড়া ফুসফুস রয়েছে। দুই মাথাতেই রয়েছে বিষাক্ত বিষ।
ক্লেওপফার জানান, তারা আশা করছেন বিরল সাপটি অবশেষে একটি চিড়িয়াখানায় দান করা হবে। একই সঙ্গে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন যে, সাপটিকে এখন ভালো করে খাইয়ে বড় করে তুলতে হবে। যাতে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে তার পরিপূর্ণতা পায়।
বিরল সাপটিকে নিয়ে বেশ গবেষণাও চলছে। এর এক্সরে রিপোর্ট দেখে ক্লেওপফার জানান, সাপটির দুটি মেরুদণ্ড রয়েছে। দুই মাথাওয়ালা সাপ প্রকৃতিতে বেঁচে থাকাও বেশ সমস্যার। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, একই শরীরের দুই মাথার মধ্যে লড়াই।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দুই মাথাওয়ালা সাপের কে আগে শিকারকে খাবে এই নিয়ে তাদের মধ্যে লড়াই বাধে। খাবার কোন অংশ দিয়ে যাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা পড়তে হয় দু’মুখো সাপেদের।
এমএআর/আরআইপি