ধর্ষণ গুজব মামলা হামলায় উত্তাল গুজরাট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:০৩ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৮

১৪ মাসের এক শিশুর ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের গুজরাট রাজ্য এখন উত্তাল। রাজ্যের সবরকন্ঠা, মেহসনা, পাটনা, আহমেদাবাদ, গান্ধীনগরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয়রা। হামলা করা হচ্ছে বিহার ও উত্তর প্রেদেশ থেকে আসা হিন্দিভাষী শ্রমিকদের ওপরে। ফলে আতঙ্কে গুজরাট ছাড়ছেন ‘বহিরাগত’ শত শত মানুষ।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর গুজরাটের সবরকণ্ঠা জেলায় ১৪ মাসের এক শিশুর ওপরে পাশবিক নির্যাতন চালায় এক তরুণ। রবীন্দ্র সাহু নামে বিহারি ওই শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকেই গুজরাটের বিভিন্ন এলাকায় বাইরে থেকে আসা হিন্দিভাষীদের ওপরে হামলা শুরু হয়।

এতে করে অনেকেই এখন ভয়ে এলাকা ছাড়ছেন। জীবিকার টানে বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে আসা হিন্দিভাষীদের ওপরে হামলা শুরু হতেই স্টেশনগুলিতে দেখা যাচ্ছে চোখে পড়ার মতো ভিড়।

তবে হামলার কথা স্বীকার করলেও ‘বহিরাগতরা উৎসবের মৌসুমে বাড়ি ফিরলে তার অন্য মানে করা উচিত নয়’ বলে দাবি করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি শিবানন্দ ঝা।

তিনি বলেন, ‘কয়েকটি জেলায় সহিংসা ছড়িয়ে পড়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মেহসানা এবং সবরকণ্ঠা জেলায়। এ ছাড়া গান্ধীনগর, পাটান এবং অমদাবাদেও হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ৪২টি। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে দুজনকে চিহ্নিত করেছে সাইবার ক্রাইম সেল। রাজ্য রিজার্ভ পুলিশের ১৭ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়েছে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলোতে।

gujrat2

ডিজি বলেন, ‘অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছি- দরকার হলে বাস স্ট্যান্ড ও স্টেশনে গিয়ে খোঁজ নিতে যে, ভয়ে কেউ পালাচ্ছেন কিনা। সে ক্ষেত্রে কথা বলে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।’

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় নেতাদের ক্রমাগত হুমকির জেরেই হিন্দিভাষীদের গুজরাট ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। যাদের সে উপায় নেই, তাদের ঠিকানা আপাতত বন্ধু বা আত্মীয়দের ‘সুরক্ষিত’ আশ্রয়ে।

হিন্দিভাষীদের আক্রমণের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে গুজরাটের ঠাকোর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। যদিও একথা উড়িয়ে দিয়েছেন ঠাকোর নেতা ও কংগ্রেসের বিধায়ক অল্পেশ ঠাকোর। শান্তি-সম্প্রীতির বার্তার পাশাপাশিই অল্পেশ হুমকি দিয়েছেন যে, তার সমর্থকদের ওপর থেকে মিথ্যা মামলা তোলা না হলে আগামী ১১ তারিখ থেকে ‘সদ্ভাবনা অনশন’ শুরু করবেন তিনি।

অল্পেশের অভিযোগ, বেসরকারি কারখানাগুলিতে অল্প মাইনেতে কাজ দেয়া হয়েছে বহিরাগতদের। ৮০ শতাংশ চাকরি স্থানীয়দের পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি।

ইতোমধ্যেই শিল্পনগরীগুলোতে মোটরসাইকেলে এসে বহিরাগত কর্মীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েক জনের বিরুদ্ধে।

ডিজি জানান, এই কারখানাগুলির আশপাশেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।